বাগমারায় আলু খেতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগের প্রাদুর্ভাবে দিশেহারা কৃষক

আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০১৭, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ

রাশেদুল হক ফিরোজ, বাগমারা



রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ‘লেট ব্লাইট’ রোগে আক্রান্ত হয়েছে আলু খেত। এ রোগের প্রাদুর্ভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আলুচাষিরা। উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকরা জানান, গত এক সপ্তার ব্যবধানে ওই এলাকার প্রায় একশ একর জমিতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। আলু গাছের পাতায় ফোসকা পড়ার মতো দেখা দেয়ার পরই সমস্ত গাছ পুড়ে যাবার মতো হয়ে মরে যাচ্ছে। মাড়িয়া ইউনিয়নের বলিদাপাড়া গ্রামের আলু চাষি আবদুর রশিদ জানান, আলু চাষে এবার তাদের লোকসান গুণতে হবে। একদিকে বাজারে আলুর দাম কম অপরদিকে রোগের কারণে আলুর উৎপাদনে ভাটা পড়ার উপক্রম। তিনি চলতি রবি মৌসুমে সাড়ে চার বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন। তার খেতের সমস্ত জমিতে ওই রোগ দেখা দিয়েছে। বালিয়া গ্রামের ইদ্রিশ আলী, কাঠালবাড়ি গ্রামের ইউসুফসহ ওই এলাকার প্রায় খেতেই এ রোগ দেখা দিয়েছে বলে জানান কৃষকরা। বালিয়া, কামারবাড়ি, বৈলসিংহ, ভটখালী, কোয়ালীপাড়া, বারইপাড়া, নাগপাড়া, দাসপাড়া, আলোকনগর, পলাশীসহ প্রায় কয়েকশ একর জমিতে আলুর গাছ ভালো গজিয়ে ওঠলেও কৃষকের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে এ রোগ।
আলোকনগর গ্রামের কৃষক হক সাহেব জানান, কিছুদিন আগে ওই রোগ দেখা দেয়। এসময় বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হয় নি। এরপর ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন খেতে। বিভিন্ন বালাই নাশক কোম্পানির ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন লাভ হয় নি। ওইসব কোম্পানির লোকদের পরামর্শে একর পর এক ওষুধ পাল্টিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। ওষুধ প্রয়োগ নিয়েও বিভ্রান্তি দেখা দেয় কৃষকদের মাঝে। তবে কৃষি অফিসের কেও মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয় নি বলে জানান বলিদাপাড়ার কৃষক আবদুর রশিদসহ অনেকেই।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বাগমারায় ১২ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। গত মৌসুমে ছিল ১২ হাজার ৬০০ হেক্টর। এ মৌসুমে আলুর চাষ ৩২০ হেক্টর বৃদ্ধি পেলেও বাজারে আলুর দাম কম ও খেতে রোগ-বালাই দেখা দেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা। প্রথমেই আলুর দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানান আলুচাষিরা।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত ইউরিয়ার ব্যবহার ও আবহাওয়া খারাপ জনিত কারণে এবং পর্যাপ্ত ওষুধ প্রয়োগ করার ফলে ওই রোগ দেখা দেয়। তবে বর্তমানে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন করে রোগ আর ছড়াবেনা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ