বাগমারা ও বাঘায় প্রখর গরমে দু’জনের মৃত্যু

আপডেট: এপ্রিল ২২, ২০২৪, ১১:১২ অপরাহ্ণ

বাগমারা ও বাঘা প্রতিনিধি:


রাজশাহীর বাগমারা ও বাঘায় প্রখর রোদ ও গরমে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে বাগমারায় এক কৃষক ও বাঘায় ব্যবসায়ীর রয়েছেন।
জানা গেছে, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ভুট্টা খেতে কাজ করার সময় প্রখর রোদ ও গরমে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ওই কৃষকের নাম মন্টু হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মোশলেম আলীর ছেলে। সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় বাগমারার তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার সকালে বাড়ির অদূরে ভুট্টাখেতে কাজ করার করার জন্য বের হন মুন্টু হোসেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে স্ত্রী ভুট্টা খেতে কাজ করা স্বামীর জন্য জগ ভর্তি পানি নিয়ে আসেন। তিনি স্বামীকে খেতের ভেতরে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদের সহায়তায় অটোভ্যানে করে দ্রুত নিকটবর্তী ভবানীগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ ক্লিনিকের পরিচালক চিকিৎসক ডা. আবদুল বারী জানান, কৃষককে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিলো। স্বজনদের সাথে কথা বলে ও লক্ষণ শুনে মনে হয় তিনি হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসরাইল হোসেন বলেন, খেতে কাজ করার সময় তীব্র গরমে কৃষক মন্টুর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে রাজশাহীর বাঘায় ‘হিট স্ট্রোকে’ আব্দুর রাজ্জাক (৫৫) নামের এক মুদি ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১১ টার দিয়ে নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা গ্রামের বড়াল নদের ঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আব্দুর রাজ্জাক বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দিঘা বাজারের একজন বিশিষ্ট মুদি ব্যবসায়ী ও দিঘা বলারবাড়ি গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার ভাইরা (স্ত্রীর ভগ্নিপতি) মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, আব্দুর রাজ্জাক বাড়ি থেকে সোমবার সাড়ে ১০ দিকে ভ্যানযোগে ছোটভাই রাবিব আহম্মেদ, মেয়ে বুলবুলি খাতুন ও নাতনি নুসাইরাকে নিয়ে আড়ানী বাজারে যান। সেখানে আমি মিলিত হয়ে ফলমূল ও মিষ্টি নিয়ে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গয়লারঘোব গ্রামের জামাই নাহিদ আলীর অসুস্থ বাবা আফজাল হোসেনকে বাড়িতে দেখতে যাওয়ার পথে পাঁকা বড়াল নদের ঘাটে হেঁটে পার হতে গিয়ে টলে মাটিতে লুঠিয়ে পড়েন তিনি। পরে সেখানে মাথায় পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মাইক্রোযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের ভাই রাব্বি আহম্মেদ বলেন, ভাই দীর্ঘদিন থেকে ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে ভুগছিলেন । দেশের চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ‘হিট স্টোক’ করে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। ভাই পারিবারিক ও ব্যবসায়িক কারণে খুব মানসিক চাপে ছিলেন। বাদ মাগরিব তাকে দাফন করা হয়েছে।

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে কারণে বয়স্করা স্টোকসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ কারণে লোকজনকে দুপুরে ঘর থেকে না বেরুনো, ফলমূল, খোলামেলা ও ফ্রিজে রাখা খাবার বর্জন, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানসহ পাতলা পায়খানা হলে ওরস্যালাইন খাওয়াসহ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।#