বাঘায় খোর্দ্দা বাউসার সেই বাগানে এবার আসেনি শামুকখোল

আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ণ


আমানুল হক আমান, বাঘা:রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের সেই আম বাগানে এবার বাচ্চা ফোটাতে আসেনি শামুকখোল। ১০ বিঘা বাগানজুড়ে থাকা ৩৮টি আমগাছ ছিল শামুকখোল পাখির আবাসস্থল। প্রজনন মৌসুমে এরা এখানে বাচ্চা ফোটাতে আসতো। উড়তে শিখলে চলে যেত। ২০১৯ সালে ইজারাদার বাগান পরিচর্যার জন্য পাখি উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা বাচ্চাগুলোর উড়তে শেখার জন্য ১৫ দিন সময় চেয়ে নেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে এলে তা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত কেন ওই এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চায়। পরে প্রশাসন বছর হিসাবে আম বাগানের ৩৮টি গাছের ভাড়া ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয়।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসককে পাখির স্থায়ী আবাস গড়ে তোলার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ ও গাছের মূল্য নির্ধারণ হলেও পরে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। বাগান মালিকরা কম ভাড়ায় পোষায় না বলে কিছু গাছ কেটে ফেলেন। গত বছরও পাখি এলে তাড়িয়ে দেন তারা। তাই এ বছরে আর বাগানে পাখি আসেনি। পাখিহীন বাগানটি এ অঞ্চলের বন্যপ্রাণীর প্রাতকূল অবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর অবহেলার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দেশে ৭১৪ প্রজাতির পাখির মধ্যে রাজশাহীতেই ছিল প্রায় ৩৫০ প্রজাতি। কয়েক বছরে ‘পাখির কলোনি’খ্যাত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, জেলখানার পেছনে, বাঘার আম বাগান, পদ্মা পাড়ের সিমলা এলাকার পাখির আবাসস্থল পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করা হয়েছে। আন্দোলন করেও আবাসগুলো বাঁচানো যায়নি। গত ১৫ বছরে ৫৬৬ প্রজাতির মধ্যে ১৯ প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা-বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত-অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র দাস বলেন, কেউ পোষার জন্য, অনেকে পাচারের জন্য বন্যপাখি শিকার করছেন। শিকারিদের অত্যাচারে এ অঞ্চল ছাড়ছে পাখি। অথচ এদের অস্তিত্ব বিপন্ন হলে অধিবাসীদের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হবে। টান পড়বে পরিবেশতন্ত্রে।

এ বিষয়ে বিভাগীয় বন্য প্রাণীসংক্রান্ত কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন, পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যক্রম চলমান। নতুন করে গাছ লাগানো হয়েছে। এগুলো বড় হলে পাখির আবাসস্থলের সমস্যা হবে না।