বাঘায় জলাবদ্ধতায় ৫০০ একর জমির রবি ফসল চাষ নিয়ে ঝুঁকিতে

আপডেট: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী):


শুরু হয়েছে রবি ফসল চাষের ভরা মৌসুম। কৃষকদের এখন জমি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু বিলের পানি রয়ে গেছে। ফলে তারা হাতগুটিয়ে বসে আছেন। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে বিল থেকে পানি নামছে না। ফলে রবি ফসল চাষ নিয়ে দুশ্চিস্তায় রয়েছেন চার শতাধিক কৃষক।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলিহার, আড়পাড়া, তেথুলিয়া, নওটিকা, আরিফপুর, ধন্দ, আমোদপুর, হরিপুর, বেড়েরবাড়ি, খুদে ছয়ঘটি, জোতরাঘব, চন্ডিপুর, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, গড়গড়ি, হাবাসপুর বিলে পানি না নামায় কৃষকরা এ সমস্যার মধ্যে পড়েছেন।

বিলে জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ৫০০ একর জমিতে শুরু হয়নি রবি ফসলের চাষ। ফলে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে পুকুর মালিকদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কৃষকরা লিখিত অভিযোগ করেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, প্রতিটি বিলের পানি প্রবাহের স্থানে অপরিকল্পিত পুকুর খনন করা হয়েছে। এ কারণে পানি প্রবাহের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। বিলে পুকুর খনন করে সেখানে মাছ চাষ করা হচ্ছে। ফলে বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

বর্তমানে বিলের প্রায় ৫০০ একর জমি জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। সেখানে এখনও রয়েছে হাঁটুপানি। এমনকি কোথাও কোমর পানি। ফলে কৃষকরা রবি ফসল চাষ শুরু করতে পারছে না। এসব জলাশয়ে পুকুর খনন করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মাছ চাষ করছেন।

এ বিষয়ে বাউসা কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম নান্টু বলেন, প্রভাবশালীরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কারণে কয়েক শত কৃষককে জিম্মি করে বিলের পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে। জিম্মি কৃষকদের পক্ষে পানি নামার পথ উন্মুক্ত করে দিতে গেলে পুকুর মালিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়।

আড়ানী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নিয়ে কৃষক ও পুকুর মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেও কোন সমাধান করা যায়নি। অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারণে পানি প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব পুকুরের মালিক অত্যন্ত প্রভাবশালী।

তেথুলিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও মাউদপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম বাদশা, আড়পাড়া গ্রামের মানিক হোসেন, আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, আড়াপাড়া বিলেসহ শতাধিক কৃষতের ৩-৪ হাজার আম গাছের গোড়ায় পানি জমে মরে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে উপজেলার সমন্বয় সভায় উপস্থাপনা করে নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব।