বাঘায় প্রধান শিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিলেন সহকারী শিক্ষকরা!

আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ৯:৫২ অপরাহ্ণ

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি:


রাজশাহীর বাঘায় প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেককে সহকারী শিক্ষকরা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বিদ্যালয়ে থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে প্রধান শিক্ষকের সমর্থক ও সহকারী শিক্ষকের সমর্থকদের মধ্যে চলছে উত্তেজনা। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় মনিগ্রাম ইউনিয়নের মীরগঞ্জের হেলালপুর মুসার ঈদগাঁ মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

এ ঘটনার পর বিদ্যালয়ের ২৯ জন শিক্ষক কর্মচারী প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেকের নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষক অনিয়ম ও অনৈতিকভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কিছু লোক নিয়োগ করা হয়। টাকা নিয়ে তাদের নিয়োগ দেন প্রধান শিক্ষক। এই টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের দাবি করেন সহকাারী শিক্ষকরা। এতে প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক রাজি না হওয়ায় সহকারী শিক্ষককরা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন।

এ দিকে প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক নিয়োগ বাণিজ্য করে ২৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। ক্ষুব্ধ সহকারী শিক্ষকদের সাথে প্রধান শিক্ষকের হাতাহাতি। এ ঘটনার পর সাজ্জাদ মাহমুদ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেন।

এরপর এ বিষয়ে আজিবর রহমান মন্তব্য করেন, লজ্জা জনক অধ্যায়। তুহিন ইসলাম মন্তব্য করেন, যারা টাকা দিয়ে চাকরি নিয়েছে তারাও দোষী, আর যারা টাকা নিয়ে মুর্খদের চাকরি দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্ট করেছে তারা আরো বড় দোষী। এই ঘুষ বাণিজ্যের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ব্যান করা উচিৎ। হাসান জামান অপু মন্তব্য করেন, ধিক্কার জানাই। ফারুক হোসেন লিখেছেন, এরকম শিক্ষক জাতির শত্রু। রফিকুল ইসলাম লিখেছেন, এরা শিক্ষক নামে কলঙ্ক। লিটন হোসেন লিখেছেন, কি হচ্ছে দেশে এগুলো শিক্ষার কি অবস্থা। আকাশ সরকার লিখেছেন, শিক্ষা ও আজ ধংসের মুখে।

মো. মারুফ মন্তব্য করেন, এরকম করাই উচিত, কারণ এর আচার ব্যবহার কোন কিছুই ভালো না, এটা একটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক, এটার কোন গুনি নাই, এর ভিতর আর মুখের ভাষা তো অত্যন্ত খারাপ, আর সে নিয়োগের টাকা গুলো সব একাই খেয়ে নিয়েছে, এটার হিসাব চাইলে ওর মাথা গরম, আর সকল ছাত্র-ছাত্রী বা সহকারী সকলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, এক কথায় স্কুলটাকে সে শেষ করে দিয়েছে, তার এই স্কুল থেকে পদত্যাগ হওয়াটাই ভালো, তাহলে গ্রামের মানুষ এবং গ্রামের স্কুলটা ভালো থাকবে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক বলেন, সহকারী শিক্ষকরা কিছু সময়ে অযৌক্তিক দাবি করে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে সামর্থের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু কিছু দাবি প্রতিষ্টানের পক্ষে মানা সম্ভব না হলে তারা সবাই একত্রিত হয়ে অকথ্যভাষায় কথাবার্তা বলে। তাদের কথা সহ্য করে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে সোমবার তারা একত্রিত হয়ে আমার গায়ে হাত দেয় এবং লাঞ্চিত করে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের ২৯ জন শিক্ষক কর্মচারী প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেকের নিয়োগ বানিজ্য ও অনিয়ম এবং দূনীতির বিষয়ে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ