বাঘায় খেজুর গুড় বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনা চলতি মৌসুমে ৩০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা

আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২৩, ৬:৪৫ অপরাহ্ণ


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী) :


বাঘা উপজেলায় চলতি মৌসুমে শীতকাল শুরুর আগেই চলছে খেজুর গুড় উৎপাদনে প্রস্তুতি। বাঘার খেজুর গুড়ের খ্যাতি দেশজুড়ে। চলতি মৌসুমে খেজুর গুড় থেকে ৩০ কোটি টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সরকারের সহায়তা নিয়ে আমের মতো বাঘার খেজুর গুড় বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।

উপজেলার দুই পৌরসভা ও সাত ইউনিয়নে ৩০ হাজার ৩৮৯ জন কৃষি পরিবার রয়েছে। খেজুর বাগান রয়েছে ৪ হাজার। এছাড়া সড়কপথ, পতিত জমি ও বাড়ির আঙিনা মিলে দেড় লক্ষাাধিক খেজুরগাছ রয়েছে। একজন গাছি প্রতিদিন ৫০-৫৫টি খেজুর গাছের রস আহরণ করতে পারেন। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪ হাজার গাছি রস সংগ্রহ করেন। প্রতি মৌসুমে তারা খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবিকানির্বাহ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একজন কৃষক তাদের গাছের সংখ্যা অনুপাতে গাছি নিয়োগ করেন। তারা মৌসুম জুড়ে রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত থাকেন। উপজেলার আমের যেমন দেশ ও বিদেশ জুড়ে খ্যাতি, তেমনি খেজুর গুড়ের খ্যাতিও রয়েছে। উপজেলায় গুড়ের প্রধান হাট বাঘা ও আড়ানী হাট। এরপর রয়েছে মনিগ্রাম ও দিঘাসহ অন্যান্য হাট।

সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার বাঘার হাট বসে। এ হাটেই সবচেয়ে বেশি গুড় বেচাকেনা হয়। উপজেলার বাঘা ও আড়ানী পৌরসভা ছাড়াও বাজুবাঘা, গড়গড়ি, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, আড়ানী, বাউসা ও চকরাজাপুর ইউনিয়নের অন্যান্য হাটেও যথেষ্ট পরিমাণ গুড় বেচাকেনা হয়। তবে বেশি দাম পাওয়ার আশায় অনেকেই বাঘারহাটে গুড় বিক্রি করতে আসেন। বাঘারহাটে রোববার প্রতি কেজি খেজুর গুড় ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়। মৌসুমের একেবারে শুরুতে এ গুড়ের দাম প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। প্রতি বছরই মৌসুমের শুরুতে বেশি দামে গুড় বিক্রি হলেও ভরা মৌসুমে দাম কিছুটা কমে যায়।

বাঘা বাজারের ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার এনামুল হক বলেন, চলতি শীত মৌসুমে ৪০-৪৫ কোটি টাকার গুড় বেচাকেনা হবে। ফলে উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে ব্যবাসায়ীরা হাজার হাজার টাকা আয় করবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সরকারি হিসাবে চলতি মৌসুমে মানুষ খেজুর গুড় থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আয় করবেন। উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে খেজুর গাছ রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বাণিজ্যিকভাবে খেজুর গুড় উৎপাদনে সহায়তা দেয়া হলে এই গুড় আরো লাভজনক করা সম্ভব। আমের মতো খেজুর গুড় বিদেশে রফতানি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিদেশে রপ্তানি করা হলে এই গুড় থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবেন।