বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
বিশ্ব যখনই অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যতিক্রম একটি দেশ যার প্রভাব খুবই কম পড়েছে। এর এটি অন্যতম কারণ হলো দেশের কৃষিখাত। কৃষির টেকসই ব্যবস্থা সবক্ষেত্রেই বৈশ্বিক মন্দা থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। ফলে গত দেড় দশকে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কখনই আশংকা তৈরি হয় নি। এমনকি করোনাকাল ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের অভিঘাত মোকাবিলায়ং কৃষির উৎপাদনশীলতা সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অংশ। কৃষি শুধুই খাদ্য নিরাপত্তা নয় এর সাথে গ্রামীণ মানুষের জীবন- বৈচিত্র, উৎসব-আনন্দ অন্বেষণ, বিনোদন ও সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ধারাও বটে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এখনো কৃষির বিকল্প চিন্তা করা যায় না। ২০১৮ সালের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্যমতে, এটি মোট শ্রমশক্তির ৪০.৬ ভাগ জোগান দিয়ে থাকে এবং দেশের জিডিপিতে এর অবদান ১৪.১০ শতাংশ। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য দূরীকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় এই খাতের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
বর্তমান সময়ে কৃষি পেশার সাথে এদেশের বেকার ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর যুক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামর্থ অনুযায়ী কেউ ফিসারি, গবাদি পশু ও পাখির খামার, বৈচিত্র্যময় ফল, সবজি ও ফুল উৎপাদন করে বেশ লাভবান হচ্ছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে কৃষকরা বিভিন্ন আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও উপকরণ ব্যবহার করছেন। মাছ চাষ, ফল, ফুল, সবজি ও গবাদি পশু চাষে অনেকে মিশ্র চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে দেয়া হয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। কৃষিতে (কৃষি, খাদ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) ৩৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিলো ৩৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে খাতটিতে ১ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কৃষি খাতের ওপর এই গুরুত্বারোপ দেশের কৃষিখাতকে আরো বিস্তৃত ও গভীর করবে বলেই বিশ্বাস। কৃষিখাতের বিনিয়োগ কখনোয় বিফলে যায় ন। তবে কৃষিখাতের যে প্রণোদণা দেয়া হয় তার আরো বহুমুখিকরণের প্রয়োজন আছে। কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষিত হলে দেশের অর্থনীতি আরো গতিশীল হয়। বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির এই অগ্রাধিকার কৃষিকে নতুন নতুন মাত্রায় উন্নীত করবে- এমনই প্রত্যাশা।