বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) রাজশাহী বাফার গুদামে মজুদ রয়েছে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিকটন জমাটবাধা ইউরিয়া সার। এছাড়া গুদামের বাইরেও রয়েছে আরো কয়েক হাজার মেট্রিকটন জমাট সার। এসব সার ডিলারদের দেয়া হচ্ছে প্রায় বাধ্য করেই। সার উত্তোলন করে বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। চাষিরা এসব সার কিনছেন না। ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মধ্যে পড়েছেন ডিলাররা। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দৈনিক সোনার দেশে প্রকাশিত হয়েছে।
জমাটবব্ধ সার বিতরণে কৃষক পর্যায়ে অনীহার কারণ হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কৃষককে যে সার আকৃষ্ট করবে সেটিই সে স্বচ্ছন্দ্যে ক্রয় করবে এটাই স্বাভাবিক। বাফার গুদামে জমাট সার গুড়ো করে তা আবার ডিলার পর্যায়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সার কার্যকর কি না তা ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ না থাকলেও গুরুতর অভিযোগটি হলো এই যে, বাড়তি অর্থ দিলে ওই গুদাম থেকে অজমাট সার পাওয়া যাচ্ছে। যারা এই বাড়তি টাকা দিচ্ছে না তাদেরকে জমাটবাধা সারই গুদাম থেকে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
২৩ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দফতরের সার মনিটরিং কমিটির সভায় জমাট সার নিয়ে অভিযোগ করেন ডিলাররা। ডিলারদের অভিযোগের প্রক্ষিতে রেজ্যুলেশন করে তা কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক। চিঠি পাঠানো হয়েছে বিসিআইসির রাজশাহী বাফার গুদামেও। তবে এখনো বন্ধ হয়নি জমাট সার বিতরণ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৮ জন ডিলার জমাট সার না নেয়ার জন্য সার উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে এ বছর কেবল রাজশাহীতেই বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৯ হাজার ৪১২ হেক্টর। ধানের ভালো দাম পাওয়ায় বোরো আবাদ বেড়েছে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায়। তবে সার নিয়ে ঝামেলায় আবাদে বিঘœ ঘটছে বলে ডিলাররাই স্বীকার করছেন।
বাংলাদেশ যে মুহূর্তে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে তখন এ ধরনের বিশৃঙ্খলা বা দুর্নীতি উৎপাদন ব্যবস্থাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে। কৃষি খাতে সরকারের যে বড় সাফল্য তা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। তাই ডিলারদের অভিযোগকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বা দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা দরকার। এর সাথে যে বা যারাই জড়িয়ে থাকুক না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নেয়া বাঞ্ছনীয় হবে।
কৃষিবান্ধব হিসেবে বর্তমান সরকার নিজেদের প্রমাণ করেছেন কিন্তু গুটিকয়েক অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য লব্ধ সাফল্যকে কোনোভাবে ম্লান হতে দেয়া যায় না। ডিলারদের অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।