বায়া-তানোর সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহনে ডাকাতি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪, ১২:৫৫ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক :রাজশাহীর পবার বায়া-তানোর সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহনে ডাকাতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত পৌনে ৪টার দিকে পবা থানাা বাগসারা ও বাগধানীর মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই এলাকাটি নির্জন। বাড়িঘর নেই। ডাকাতদলের কবলে পড়া এক প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও এ বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদিও ডাকাতদলের কবলে পড়া আত্মীয়ের কাছ থেকে ফোন পেয়ে আরও এক ব্যক্তি পুলিশের জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল করার কথা জানিয়েছেন।

পবা থানা সূত্রে জানা গেছে, এর আগে এই এলাকা থেকে একটি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে।
নিয়ামতপুর উপজেলার নাকইল গ্রামের ব্যবসায়ী এনামুল হক এই রাতে বায়া-তানোর সড়ক হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি জানান, তিনি একটি নতুন প্রাইভেটকার কিনে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পেছনের আরেকটি মাইক্রোতে তার কয়েকজন নিকটাত্মীয় ছিল। তিনি প্রাইভেটকার নিয়ে ছিলেন সামনে, পেছনে মাইক্রোটি ছিল একটু দূরে।

তানোর উপজেলার সীমানার মধ্যে ঢোকার একটু আগে দেখেন, সামনে কয়েকটি মাছবাহী মিনি ট্রাক, পিকআপ ও সিএনজি দাঁড়িয়ে। তিনি ভেবেছিলেন সামনে যানজট লেগেছে। তাই ডান পাশ দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোকে ওভারটেক করার চেষ্টা করেন। এ সময় ডাকাতদলের কয়েকজন সদস্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার গাড়ি ঘিরে ধরে। তারা গাড়ির গেট খোলার জন্য বলতে থাকে। কিন্তু এনামুল হক গেট না খুলে গাড়িকে পেছন দিকে নিতে থাকেন।

এরই মধ্যে পেছনের প্রাইভেটকারটিও চলে আসে। একইভাবে এই প্রাইভেটকারের গেট খোলার জন্যও বলে ডাকাতদলের সদস্যরা। তবে ওই গাড়ির চালক তুহিন আলীও গেট না খুলে গাড়ি পেছনে ঘোরাতে থাকেন। তখন ডাকাতদলের সদস্যরা গাড়িতে হাঁসুয়া ও রামদার আঘাত করতে শুরু করে। প্রাইভেটকার চালক তুহিনের গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়। গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করায় ডাকাতদলের এক সদস্য তুহিনকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করে।

এতে তুহিনের ব্লেজার কেটে যায়। তিনি একটুর জন্য রক্ষা পান। এভাবে তারা পালিয়ে আসেন। ডাকাতদলের কবলে এনামুলের নতুন প্রাইভেটকারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এনামুল হক জানান, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে তারা আবার বায়া মোড়ে চলে আসেন। এর প্রায় ২০ মিনিট পর ওই রাস্তা দিয়ে আরও গাড়ি যেতে শুরু করলে তারাও পেছনে পেছনে যান। গিয়ে দেখেন, ডাকাতদল যেখানে আক্রমণ করেছিল সেখানে সড়কের ওপর থেকে একটি কাটা গাছ সরানো হচ্ছে। ওই সময় ঘটনাস্থলে ডাকাতদলের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। এনামুল দাবি করেন, প্রথমবার ঘটনাস্থলে তিনি ১৫ থেকে ২০ জন ডাকাত দেখেছেন। সবার হাতেই দেশীয় অস্ত্র ছিল। তবে কতটি গাড়িতে ডাকাতি করা হয়েছে সে তথ্য তিনি দিতে পারেননি।

এনামুল হকের গাড়ি থেকে ঘটনার সময়ের একটি ভিডিও করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, এনামুলের গাড়ি ঘটনাস্থলে গেলেই দেশীয় অস্ত্র হাতে দুজন গাড়ির দিকে টর্চের লাইট মারেন। গাড়ি থামলে তারা সামনে এসে দাঁড়ান। এনামুল যখন গাড়ি পেছনে নিচ্ছিলেন, তখনও তারা দুজন পেছন পেছন ধাওয়া করছিলেন।
এনামুল হকের আত্মীয় বায়া এলাকার আবদুল গনি পুলিশের জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলেন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আত্মীয়রা ডাকাতদলের কবলে পড়ে ফোন করে। আমাকে তারা বলেন যে তারা ডাকাতদলের কবলে পড়েছেন। এখানে হতাহতের ঘটনাও ঘটতে পারে। এ খবর শুনেই তিনি পুলিশের ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ঘটনা জানান।

এ ব্যাপারে পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দী বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা তাদের জানা নেই। গতরাতে আমরা সারারাত ডিউটি করেছি। আমার সঙ্গে এই জোনের উপকমিশনার (ডিসি) স্যারও ছিলেন। ঘটনা শুনলে তো সঙ্গে সঙ্গে যেতাম।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ