বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হলেন নারীকর্মীরা

আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০১৭, ১১:৪৮ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক



রাজশাহীর পবা উপজেলার হাট রামচন্দ্রপুরে বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে মেয়েপক্ষের লোকজনের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা ও তার দলের নারী কর্মীরা। গতকাল শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে পবার হাটরামচন্দ্রপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গতকাল দুপুরে পবা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের সুলতান আলীর মেয়ে সুমনা খাতুনের ষষ্ঠ  শ্রেণিতে পড়–য়া সুমনা খাতুনের বিয়ে দেয়া হচ্ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে নারী ও শিশুর আইনি সহায়তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা ও অফিস সহকারী আসমা খাতুনসহ দলের নারীকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। মেয়ের আত্মীয়-স্বজনরা তাদের ঘটনাস্থলে দেখতে পেয়ে তরিকুলসহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে মারধর করার হুমকিসহ খারাপ গালি-গালাজ করেন। এরপর তারা নিরুপায় হয়ে পবা থানায় ফোন দিলে থানা থেকে দু’জন পুলিশ সদস্য আসেন। তবে মেয়ের আত্মীয়স্বজনদের তোপের মুখে তারাও বিয়েটি বন্ধ করতে পারেন নি।
পুলিশ আসার পর কনের বয়সের প্রমাণপত্র চাইলে তারা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। পরে পুলিশের কাছে তারা জানায় এখন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দিচ্ছেন। অনেক  আগেই বিয়ের এফিডেভিট করা ছিল। বিয়েটি মোহনপুরের কোন এক কাজীর অফিসে করানো হয়। তবে ওই মেয়েটি ২০১৬ সালে ৫ম শ্রেণি পাশ করেছে।
এ বিষয়ে নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা বলেন, আমরা বাল্য বিয়ে হচ্ছে শুনে তা ইউএনও স্যারকে জানিয়ে পুলিশের সহায়তায় বন্ধ করতে গিয়েছিলাম। কিন্ত তারা আমাদের নারী কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ দেয় ও লাঞ্ছিত করে। আমরা থানায় অভিযোগ করব।
ওই এলাকার কাজী আব্দুর রশিদ বলেন, মেয়েটি ছোট বলে আমি বিয়ে পড়াইনি। তাই তারা অন্য এলাকায় গিয়ে এফিডেভিট করেছে। হাটরামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসনা বানু বলেন, ওই মেয়ে আমার স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।
এ বিষয়ে পবা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পরিমল চক্রবর্তী বলেন, আমি পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তার বিয়ে অনেক আগেই হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে। সেজন্য পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে নি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ