রবিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ৫ বৈশাখ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে বাংলাদেশের বাসাবাড়িতে এবং বিভিন্ন যানবাহনে যেসব গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশেরই মেয়াদ ইতোমধ্যেই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, একটা সিলিন্ডারের নির্দিষ্ট লাইফটাইম থাকে দশ বছর ১৫ বছর। এর পর সেগুলো ধ্বংস করে ফেলতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে গাড়িতে যেটা ১০ বছর বা ১৫ বছর আগে লাগানো হয় সেটা এখনো চলছে। সেগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং যেকোনও সময় বিস্ফোরিত হতে পারে”। বিবিসি বাংলার সূত্র উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দৈনিক সোনার দেশে প্রকাশিত হয়েছে।
লাইফটাইম উর্ত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। যানবাহন ও বাসাবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা মাঝেমধ্যেই সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এতে জীবনহানির ঘটনাও আছে। শুধু মেয়াদ উত্তীর্ণের ফলেই যে, এসব দুর্ঘটনা ঘটছে তা নয়Ñ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে অজ্ঞতা ও অসচেতনার ফলেও দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে। তদুপরি বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক হলেও তা নিয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ লক্ষনীয় নয়। অথচ যেকোনো সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে পারে বলে আশংকার কথা বলা হচ্ছে সেফ সিলিন্ডার ক্যাম্পেইন নামে অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। ওই সংস্থাটি নতুন একটি প্রচারণা কার্যক্রমও শুরু করছে। সরকারের বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সাথে এই প্রচারণা চালাবে সেফ সিলিন্ডার ক্যাম্পেইন ।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত অক্টোবর মাসে বিস্ফোরক অধিদপ্তর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ১১ হাজার গ্যাস সিলিন্ডার পরীক্ষা করে সেগুলোর মধ্য থেকে আট হাজার সিলিন্ডার বাতিল করে। কিন্তু ওই প্রতিবেদনে বৈপরীত্যের কথাও উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যারা ব্যবসা করছেন তারাই আবার টেস্টের সার্টিফিকেট দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন বাসাবাড়ি এবং অটো রিকশায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয় গ্যাস সিলিন্ডার। কিন্তু অনেক সময়ই সেসবের বিস্ফোরণের কথা শোনা যায়।
জীবন ও সম্পদের ক্ষতির কারণ যেখানে বিদ্যমান তাকে কোনোভাবেই অবহেলা করে দেখার সুযোগ নেই। এটি খুবই উদ্বেগজনক তথ্য যে, বেশির ভাগ সিলিন্ডারই লাইফটাইম পার করেছে। তারপরও এসব সিলিন্ডার ব্যবহারযোগ্য থাকে কী করে? রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থ্য্ াযখন মেয়াদ উত্তীর্ণ সিলিন্ডার বাতিল করেছে, তা হলে বেসরকারি ব্যবস্থপনার সিলিন্ডার বাতিল হবে না কেন? সেটাও তো বিস্ফোরক অধিদপ্তরের দেখার কথা নয় কি? সরকারেরই দায়িত্ব ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত রাখা। ব্যাপারটিকে মোটেই অবহেলার সুযোগ নেই। যথাশিগগিরই লাইফটাইম উর্ত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বাতিল করে সেগুলো ধ্বংস করা দরকার। মেয়াদউত্তীর্ণ সিলিন্ডার বাজার থেকে দ্রুত প্রত্যাহার করতে সরকারের পদক্ষেপ চাই।