বিএডিসির উপ-সহকারি পরিচালকের বিরুদ্ধে ৬৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২৪, ১১:২৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহী বিএডসির আলু বীজ বিভাগের উপ সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে ৬৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছে চাষিরা। এছাড়াও তিনি ব্যাপক অনিয়মের সাথে যুক্ত আছেন। তিনি একা চারটি পদ দখল করে আছেন। এ কারণে তিনি ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছেন বলে চাষিরা অভিযোগ করেছেন।

এই উপ-সহকারি পরিচালকের নাম আব্দুল কাদের। তিনি বিএডিসি রাজশাহী জোনে কর্মরত আছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটি করেন বিএডিসি আলুবীজ চুক্তিবদ্ধ কৃষক ফোরাম রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক ও তানোর নোনাপুকুর ব্লক লিডার হাসিবুর রহমান। অভিযোগ পাওয়ার পর ২৯ অক্টোবর দুই সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিএডিসি রাজশাহীর যুগ্ম পরিচালক ফজলে রব ও সদস্য করা হয়েছে উপ পরিচালক কে.এম গোলাম সরওয়ারকে। তবে এখানেও চাষিরা আপত্তি তুলেছেন। তারা বলছেন, ফজলে রব ও সরওয়ারের খুব ঘনিষ্ঠ আব্দুর রব। তাদের ম্যানেজ করে চাষিদের ঠকাচ্ছে কাদের।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, একর প্রতি সাত মেট্রিক টন বীজআলু হিমাগারে দিতে যে সকল চাষিরা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানী করিয়েছেন তিনি। এছাড়াও থানায় অভিযোগ ও মামলার হুমকিও দিতেন। চুক্তিবদ্ধ চাষিরা নিজেরা বীজ বাছাই, সেলাইয়ের দড়ি, ওজন করা, গাড়ি লোড দেওয়া ও শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করেছেন। কিন্তু এই টাকা তিনি চাষিদেরে পরিশোধ করেননি। সমস্ত সরকারি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন।

প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি বীজআলুর পরিবর্তে তিনি সাড়ে ৫৩ কেজি বীজ আলু নিয়েছেন। যা সাড়ে তিন কেজি বেশি নিয়েছেন। চুক্তিবদ্ধ চাষিরা ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন অর্থাৎ ৩৪ হাজার বস্তা আলুবীজ সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু বস্তাপ্রতি তিন কেজি বেশি হিসাবে বীজআলুর মূল্য ৫১ লাখ টাকা এবং টেন্ডারের বস্তা সেলাইসহ অন্যান্য খরচ ১৫ লাখ টাকাসহ মোট ৬৬ লাখ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। রাজশাহী জেলার বীজ অন্য জেলায় পাঠানো, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ব্লক লিডারদের বাদ দিয়ে নিজেই শেয়ারে অন্য নতুন জমি দিয়ে ব্লক করানো এবং পছন্দের ব্যক্তিদের ব্লক দিয়েছেন তিনি।
চাষিরা বলছেন, সঠিক তদন্ত নাহলে অভিযোগ হিমঘরে চলে যাবে। যে দফতরের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে দফতরের প্রধানকে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যও এই দায়িত্বে ছিলেন ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তিনিও এর আগে এরকম অনিয়মের সাথে যুক্ত ছিলেন।

এবিষয়ে কথা বলার জন্য বিএডিসির উপ-সহকারি পরিচালক আব্দুল কাদেরকে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তাই অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির সদস্য ও উপপরিচালক কে.এম গোলাম সরওয়ার বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। এই তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুগ্মপরিচালক ফজলে রব স্যার। তদন্তে যা পাওয়া যাবে তা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হবে। তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমার কিছু করার নাই। মূল দায়িত্ব পালন করবেন ফজলে রব স্যার, আমি তাকে শুধু সহযোগিতা করবো।

Exit mobile version