বিএনপির সমাবেশ, হরতাল

আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২৩, ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ

চরিত্র যে একই থেকে গেল!

দেশবাসীর কাছে যা প্রত্যাশিত ছিল না- তাই হলো। আগামীতে যা হতে পারে সেই ভাবনায় দেশবাসী এখন উদ্বেগাকুল, উৎকণ্ঠিত। ২৮ অক্টোবরের সেই বেদনা, শোকগাথা, আতঙ্কÑহত্যা সন্ত্রাস অগ্নিসংযোগ, ধ্বংযজ্ঞেরই পুনরাবৃত্তি হলো। বিএনপি আবারো তাদের সেইরূপে, স্বরূপে নিজেদের প্রকাশ ঘটালো। এর ফলে পরিবর্তিত রাজনৈতিক ধারার প্রত্যাশা বাস্তবিক মেলাতে পারলো না। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর আরো এক বক্তক্ষয়ী আর ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী হয়ে রইলো। অহিংস আন্দোলনের মধ্য দিয়েই যাচ্ছিল বিএনপি। দেশের মানুষের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি হচ্ছিলÑ বিএনিপ সহিংসতার রাজনীতি ত্যাগ করেছে। কিন্তু তা আর হলো কই। বিএনপি ধৈর্য হারিয়ে বসলো।

সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর পুলিশ সদস্যকে হত্যা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ হয়েছে শুধু নয়, এবার সন্ত্রাসে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। মহাসমাবেশ ও হরতাল সমর্থকরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। এই সন্ত্রাস ছিল নজিরবিহীন। যা হিংসার ভয়াবহ রূপকেই তুলে ধরেছিল। বিএনপি কর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন ৪০ জন সাংবাদিকও। পুলিশ ও সাংবাদিকদের টার্গেট করে সন্ত্রাস পরিচালনা করার উদ্দেশ্যটাই যেন স্পষ্ট হয়েছে। ঘটনা পরম্পরা এটাও প্রমাণ করে যে, সন্ত্রাস সৃষ্টি পরিকল্পিত ছিল।

সংবাদ মাধ্যমের তথ্যমতে, শনিবার সারাদেশে অগ্নিসংযোগে ৪৫ টি যানবাহন ভষ্মিভুত হয়। এছাড়া পুলিশ বক্স, বিদ্যুৎ অফিস, বাস কাউন্টার, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। রোববার সকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে মোট ১৩টি আগুনের সংবাদ পাওয়া যায়। এ সব ঘটনার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহগ সারা দেশে সহস্রাধিক নেতাকর্মি গ্রেফতার হয়েছে। অসংখ্য মামলা হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর বিএনপি তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে যে. দেশ আবারো অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।

সন্ত্রাস- নৈরাজ্য সৃষ্টির মধ্যদিয়ে বিএনপির কতটুকু অর্জন হলো? বরং ২০১৩ ও ২০১৪ সালের সহিংস সংঘাতের স্মৃতি আবারো সামনে এলো যে, বিএনপি সহিংসমুক্ত রাজনীতিতে অভ্যস্থ হতে পারলো না। রাজনৈতিকভাবে বিএনপি আবারো নিজেদের পিছনের দিকেই নিয়ে গেল। দলটির ভবিষ্যতের জন্য এটা মোটেও শুভ খবর নয়। বিএনপি দল হিসেবে গণতান্ত্রিক দলের বৈশিষ্ট্যে ফিরছিল কিন্তু সেখান থেকে দলটি আরো পশ্চাদে ফিরে গেল। যা কারোরই কাম্য ছিল না। বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনৈতিক ধারাতে বিএনপি কখনোয় নিজেদের প্রমাণ করতে পারলো না। দলের নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা এবং ভবিষ্যতমুখিন চরিত্র-বৈশিষ্ট থেকে অনেক অনেক পিছনেই থেকে গেল। এই বিবেচনায় দলটি মূল ধারার রাজনীতিতে আদৌ ফিরবে কি?

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version