বিচারক সঙ্কটে নওগাঁর বিভিন্ন আদালতে মামলা জট || ভোগান্তিতে বিচার প্রার্থীরা

আপডেট: মার্চ ৩০, ২০১৭, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ

নওগাঁ প্রতিনিধি



নওগাঁর বিভিন্ন আদালতে বিচারক সঙ্কটে মামলার জট পড়ে গেছে। বিচারকের গুরত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় ৩৮ হাজারের বেশি মামলার বিচার ঝুলে রয়েছে। এখন দিন যতো যাচ্ছে জট ততো বাড়ছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বিচার প্রার্থীরা।
নওগাঁয় বিচার কাজ পরিচালনায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন  ট্রাইব্যুনাল এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ অধীনস্থ আদালতসমূহে ২৯টি বিচারকের পদের মধ্যে ১০টি  পদ এখন শূন্য। এর মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের একটি পদ প্রায় এক বছর থেকে শূন্য রয়েছে। এছাড়া সহকারী জজের দুইটি এবং সিনিয়র ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নয়টি পদে ৫টি শূন্য রয়েছে।
নওগাঁর ধামইরহাট থেকে এসেছেন জমিলা বেগম। তিনি জানান, গত ৭ বছর থেকে আদালত পাড়ায় ঘুরছেন স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলায়। দীর্ঘ এ সময়ে স্বামী আবার বিয়ে করে বেশ সংসার করছেন। আর তিনি বিচারের আশায় আসছেন আর তারিখ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। একই অবস্থা জানালেন আরো বেশ কয়েকজন বিচার প্রার্থী। তারা বলেন, এসে শুধু তারিখ নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। ফলে আর্থিক ও মানসিক ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এসব বিচার প্রার্থীরা।
স্বল্প সংখ্যক বিচারক দিয়ে বিপুল সংখ্যক মামলার বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। মামলার বাদী, বিবাদী এবং আসামিরা মানসিক, শারীরিক এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আইনজীবীদের মধ্যে মিনহাজুর রহমান, আবদুল মোতালেব, এসএম আ. রহমান জানান, বাদী-বিবাদি আসছেন। অনেক সময় বিচারক সঙ্কটে কোর্ট বসছে না। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা আইনজীবী বার সমিতির সভাপতি সরদার সালাউদ্দিন মিন্টু বলেন, আমরা নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। শূন্যপদসহ অতিরিক্ত বিচারক চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। তাছাড়া সার্বিক বিষয় নিয়ে খুব শীঘ্রই আমাদের একটি দল ঢাকায় যাওয়া কথা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলার দেওয়ানী, ফৌজদারী ও নারী শিশু নির্যাতন মামলার ফাইলিং হার এ জেলার তুলনামূলক অনেক বেশি। এর মধ্যে মান্দা, সাপাহার, মহাদেবপুর নারী নির্যাতন মামলা বেশি হয়ে থাকে। নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যানেল দুইটি কোর্টে রয়েছে, কিন্তু একটি পদ শূন্য। অতিরিক্ত বিচারক এ দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে ফৌজদারী মামলা বিচারাধীন আছে ১০ হাজার ৪৭৯টি। এর মধ্যে শিশু মামলা ৪৭৭ টি, নারী নির্যাতন মামলা ২৯৮৭ টি। এছাড়া দেওয়ানী আদালতে ২৮ হাজার ৪৪২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে ।
সরকারী পাবলিক প্রসিকেউটর (পিপি) জানালেন, জরুরি ভিত্তিতে বিচারক সঙ্কট নিরসন করা দরকার। শুধু বিচারক স্বল্পতার কারণে মামলা বিলম্বিত হচ্ছে। খুব দ্রত এ সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ