সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নজরুল ইসলাম বাচ্চু, চারঘাট
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু হলেই ফরিদপুর থেকে চলে আসেন রাজশাহী। এরপর রাজশাহীর প্রতিটি উপজেলাসহ নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় যায় শুধু জাতীয় পতাকা ও ব্যান্ড বেজ বিক্রি করতে। বছরের অন্য সময় হাড়ি পাতিলের ব্যবসা করলেও এ মাসটিতে হাড়ি পাতিলের ব্যবসা বন্ধ রেখে স্বাধীনতার প্রতীক জাতীয় পতাকার ফেরিওয়ালা হয়ে যান।
এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম তিনি আবদুস সোবহান (৩২)। ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার মালিকগ্রাম এলাকায় তার বাড়ি।
সোবহানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবারে মাকে নিয়ে তার সংসার। ছোট একটা ভাই রয়েছে তাও বিদেশে চাকরি করে। ছোট বেলা থেকেই তিনি হাড়ি পাতিলের ব্যবসা করেন। গাজিপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করে হাড়ি পাতিল বিক্রি করেন। বছরের ১১ মাস ১৫ দিন হাড়ি পাতিলের ব্যবসা করলেও সোবহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বর আসলেই জাতীয় পতাকা ও ব্যান্ড বেজ নিয়ে চলে আসেন রাজশাহী। রাজশাহীর শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছে দেন জাতীয় পতাকা ও ব্যান্ড বেজ। এরপর ছুটে চলেন, নাটোর, নঁওগা, চাপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায়। এরপর ১৫ ডিসেম্বর রাতে চলে যান গাজিপুর জেলায়। এভাবেই গত ১২ বছর ধরে জাতীয় পতাকা বিক্রি করেই চলেছেন সোবহান।
সোবহান বলেন, ছোট বাচ্চা থেকে বড় লোকজন যখন আমাকে পতাকা বিক্রেতা বলে ডাক দিয়ে কাছে ডেকে একটি পতাকা কিনে নেন, তখন আমার ভালো লাগে। সুদূর ফরিদপুর থেকে এখানে আসার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে জাতীয় পতাকা প্রতিটি মানুষের নিকট পৌঁছে দেয়া। এতে করে পতাকা বিক্রিতে আমার লাভও হয়। কখনও লোকসান হয় নি। প্রতি বছরই আমাকে ডিসেম্বর মাসে পাবেন আপনারা। আমার এলাকার অনেক মানুষ আজ এ পেশায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। সকলেই বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় পতাকা বিক্রি করে রাতে রাজশাহী শহরে এক জায়গায় হই। পরে রাতে একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রীযাপন করে ভোর বেলায় আবারো বের হই জাতীয় পতাকা বিক্রি করতে। এভাবেই চলবে ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত। সব মিলিয়ে স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বর শুরু হলেই চারঘাটে ভ্রাম্যমাণ রাস্তায় চলে জাতীয় পতাকা বিক্রি।