রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
সাধারণত বিদেশে যাওয়ার সময় শিক্ষা সনদ, বৈবাহিক সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যন্য প্রয়োজনীয় সনদগুলো সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন বা সত্যায়ন করতে হয়। তবে ঢাকায় যেসব দেশের দূতাবাস নেই, সেসব দেশের ক্ষেত্রে কাছাকাছি কোনো দেশে থাকা দূতাবাসে গিয়ে এই ভেরিফিকেশনের কাজটি সারতে হয়।
সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে দূতাবাস নেই– এমন দেশে যেতে সনদ সত্যায়নের জন্য ভারতের দিল্লি যেতে হয়। যা বেশ ভোগান্তির এবং ব্যয়বহুলও। তবে এই ভোগান্তি লাঘবের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
সোমবার (২০ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘অ্যাপোস্টাইল কনভেনশন-১৯৬১’ নামের একটি চুক্তিতে সই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার ফলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়নের মাধ্যমেই প্রয়োজনীয় সনদগুলো বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। অর্থাৎ এই কনভেনশনে সই করা হলে ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভেরিফিকেশনই যথেষ্ট হবে।
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘অ্যাপোস্টাইল কনভেনশন-১৯৬১ এ বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হওয়ার বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
১৯৬১ সালের একটা কনভেনশন আছে, যেখানে ১২৬টি দেশ সদস্য। বাংলাদেশও এই কনভেনশনে সই করার জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়েছে।’ তিনি জানান, ১২৬টি সদস্য দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, রাশিয়া, সৌদি আরবসহ সব বড় রাষ্ট্র রয়েছে।
প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের শিক্ষার্থী বা অন্য কোনো ব্যক্তি বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়ে ভেরিফিকেশন করতে হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করে, তারপর সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সত্যায়িত করে।
এরপর যে দেশে যাবে, সেই দেশের দূতাবাসে গিয়ে সত্যায়িত করতে হয়। এভাবে আমাদের দেশের সনদ অন্য দেশে কার্যকর হয়। বাংলাদেশে অনেক দেশের দূতাবাস আছে, প্রায় ৯০টির মতো দেশের দূতাবাস আছে দিল্লিতে। যেসব দেশের দূতাবাস ঢাকায় নেই, ওইসব দেশের সনদ স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে এখন আমাদের দিল্লিতে যেতে হয়। এটা বিরাট একটা জটিলতা। আমাকেও একবার এই জটিলতায় পড়তে হয়েছিল।’
মাহবুব হোসেন আরও বলেন, ‘অ্যাপোস্টাইল কনভেনশনের যারা সদস্য, তাদের নিয়ম হচ্ছে- সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি ভেরিফাই বা সত্যায়িত করে দেয়, তাহলে দ্বিতীয় দেশে গিয়ে আবার ভেরিফাই করতে হয় না। কনভেনশনের মূল বিষয়টিই হচ্ছে এটা। এতোদিন আমরা সদস্য ছিলাম না। সে কারণে আমাদের অনেক ভোগান্তি হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিয়ষটি উত্থাপানের পর মন্ত্রিসভা খুব ইতিবাচকভাবে বিষয়টি গ্রহণ করে এবং অনুমোদন করে। এই কনভেনশনে সই হওয়ার ফলে ইউরোপ আমেরিকার দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আর এসব ভোগান্তি হবে না এবং ব্যয় সাশ্রয়ী হবে।’ এদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সনদ সত্যায়িত করার প্রক্রিয়টিও ডিজিটাল করা হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে আইসিটি মন্ত্রণালয়।- ঢাকা ট্রিবিউন