বিনামূল্যের বইয়ে অর্থ নেয়ার অভিযোগ ।। তদন্ত করে দোষিদের শাস্তি দিতে হবে

আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০১৭, ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এ বছর পাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরর ৩৬ কোটি ২১ লাখেরও বেশি বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বছরের শুরুর দিনটিই বাংলাদেশ ‘বই উৎসব’ হিসেবে পালন করে আসছে। এ দিনে লক্ষ লক্ষ শিশু নতুন বইয়ের গন্ধ বুকে নতুন উদ্দীপনায় শিক্ষার আলোক মিছিলে শামিল হয়। অভিভাবকদের স্বপ্নের জাগরণ আজ দেশ জুড়ে। বাংলাদেশের অনেক অর্জনের মধ্যে এও এক বিরাট অর্জন যে, দেশের মানুষের মধ্যে শিক্ষাবোধ সৃষ্টি হয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ের দীনহীন মানুষও তার সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছে। বিনামূল্যে বই বিতরণের ফলে প্রাথমিক শিক্ষায় শিশু ভর্তির হার আশানুরূপ হয়েছে। উচ্চ বিদ্যালয়েও ঝরে পড়ার হার অনেক কমেছে। এটি বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে ইতিবাচক ধারার সৃষ্টি করেছে।
এই সাফল্যের গায়ে কালিমা লেপনের ছোটখাটো অভিযোগও উঠছেÑ যা অত্যন্ত দুঃখের ও উদ্বেগেরও। বিনামূলের বই নিয়ে বেসাতি করা জঘন্য অপরাধই বটে। এটি শুনতে খারাপই লাগে নাÑ এটি শিক্ষক সমাজের জন্য লজ্জাষ্করও বটে। মানুষের লোভ এতই নি¤œ পর্যায়ে নামবে- তাও আবার শিক্ষকদের, এটা ভাবতে কষ্টই হয়।
দৈনিক সোনার দেশে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজশাহীর বাগমারা ও নওগাঁর পতœীতলায় শিক্ষার্থীদের মাঝে সরকারি নতুন বই বিতরণে টাকা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই দিতে গিয়ে টাকা নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানের অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ :  শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের হাতে বই দেয়ার সময় ভ্যান ভাড়ার নামে টাকা নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্যারেরা টাকা ছাড়া বই দিবে না তাই টাকা দিয়েই নিতে হচ্ছে। প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দশ টাকা করে নেয়া হচ্ছে বলে তারা জানায়। পতœীতলার কয়েক শিক্ষার্থী সরাসরি শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেছে যে, ওই শিক্ষকগণ তাদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে নিয়েছেন। যদিও ওই শিক্ষকগণ তা অস্বীকার করেছেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিনামূল্যের বই বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগটি বিচ্ছিন্নভাবে হলেও একে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মধ্যে যে শিক্ষা-জাগরণের সৃষ্টি হয়েছে এ ধরনের ঘটনার সত্যতা থাকলে ওইসব মানুষ হতাশ হতে পারেÑ যা দেশের শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য ক্ষতিকর হবে। অতএব বিনামূল্যের বইয়ের বিনিময়ে অর্থ নেয়ার অভিযোগ দায়িত্ব নিয়েই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্ত করা উচিৎ। ঘটনায় কেউ দোষি প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাই ক্রমশ বিস্তার লাভ করতে পারে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ