রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ রাজশাহীর আয়োজনে নানা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটের সামনের ঘণ্টাব্যাপি নার্সিং পেশা ও নার্সদের নিয়ে কটূক্তি করায় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূর সহ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের সকল নন-নার্সিং প্রশাসন ক্যাডারদের অপসারণ এবং উক্ত পদ সমুহে উচ্চ শিক্ষিত, দক্ষ ও অভিজ্ঞ নার্স কর্মকর্তাদের পদায়ন নিশ্চিত করার এক দফা দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময়ে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, নার্সিং সংস্কার পরিষদ রাজশাহীর প্রধান সমন্বয়ক রাজশাহী নার্সিং কলেজের মনিরুল হাসান, সমন্বয়ক রাজশাহী নার্সিং কলেজের আকতারা বেগম ও শহিদুজ্জামান শাহীন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কামরুন নাহার, মু. খলিলুর রহমান ময়েজ উদ্দীন, মামুনুর রশিদ, সাদরুল ইসলাম, ফকরুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, ইলিয়াস সরেন, সাইফুল ইসলাম, আজাদুজ্জামান, আব্দুর রহমান, আসমা খাতুন, আফসানা পারভীন, আরিফুল ইসলাম, মুক্তা জামান, রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতাল খন্দকার গোলাম হোসেন, রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের আয়নাল হক, শিক্ষার্থী, পোস্ট বেসিক, রাজশাহী নার্সিং কলেজের সাইমুম আহম্মেদ, বেকার নার্স মুশফিকুর রহমান কানন, রাজশাহী নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল কাফী ও আফরোজ সুলতানা। এছাড়াও সিনিয়র-জুনিয়র নার্সসহ সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন নার্সিং ইন্সটিটিউটের শত শত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, নার্সিং একটি আন্তর্জাতিক মহৎ পেশা। বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত রেজিস্ট্রার্ড নার্স, মিডওয়াইফ ও নার্সি শিক্ষার্থীরা সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহন করে এবং এই সংগ্রামে গুলিবিদ্ধ ও গ্রেফতার হয় নার্সরা। আন্দোলনকারী আহত শিক্ষার্থীদের সেবায় সম্মুখ ভূমিকা পালন করেছে নার্সরা। হাসপাতালে যখন শুরু থেকে আওয়ামী মদদপুষ্ট কর্তারা সেবাদানে বাধা প্রদান করে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরন সরবারহ বন্ধ করে দেয় ঠিক তখনি নার্সরা জীবনের ঝুকি নিয়ে ছাত্রদের জীবন বাঁচিয়েছে। হাসপাতালে নার্সদের প্রত্যক্ষ ভুমিকা না থাকলে মৃত্যু সংখ্যা হয়তো দ্বিগুন হতো বলে উল্লেখ করে।
তারা আরো বলেন, নার্সিং এর বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতা নিরসন এবং সেবার মান অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৭ সালে পৃথক সেবা পরিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে নার্সিং একটি স্বতন্ত্র পেশা হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সেবা পরিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর হতে পরিচালকসহ সকল প্রশাসনিক পদে যোগ্য ও অভিজ্ঞ নার্স কর্মকর্তাদেরকেই পদায়ন করা হতো। কর্মরত নার্সদের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ২০১৬ সালে সেবা পরিদপ্তরকে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিপ্তরে উন্নীত করা হয়। অধিদপ্তরে উন্নীত হওয়ার পর থেকে মহাপরিচালক পদে সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিবকে পদায়ন করা হয় এবং পরিচালক পদগুলোতে যোগ্য ও দক্ষ নার্সগণকে পদায়নের কথা থাকলেও জবরদখলের মাধ্যমে সরকারের উপসচিবদের পদায়ন করার মাধ্যমে নার্স সমাজকে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয় বলে উল্লেখ করেন তারা।
মানববন্ধনের বক্তারা আরো বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে বাক স্বাধীনত না থাকায় কোন প্রতিকার বা অভিযোগ উত্থাপন করার কোন পরিবেশ না থাকায় সাধারণ নার্সগণ বিভিন্ন হয়রানি, অপমান, লাঞ্ছনা নীরবে সহ্য করে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) হয়েও ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূর নার্সিংকে একটি নিম্নমানের চাকরি/পেশা হিসাবে হেয় পতিপন্ন করেন এবং শেখ হাসিনা ২য় শ্রেণির পদমর্যাদা প্রদান করে ভুল করেছেন বলে উপহাস ও কটূক্তি করেন। যার ফলে সর্বস্তরের নার্স, মিডওয়াইফ এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং এহেন গর্হিত আচরনের জন্য তীব্র প্রতিবাদ ও তাঁর অপসারণ দাবী করেন তারা।
এক দফা যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামীতে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আরো বৃহৎ কর্মসূচি ও প্রয়োজনে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হবে হুঁশিয়ারী দেন তারা।