শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগরে বিয়ের পর পোষ্য কোটায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মিরাট উত্তরপাড়া (বৈঠাখালী) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমানের মেয়ে সবনম মোস্তারী পোষ্য কোটায় ওই বিদ্যালয়েই সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, প্রধান শিক্ষক মো. আনিছুর রহমানের মেয়ে সবনম মোস্তারী ২০১১সালে এসএসসি, ২০১৩সালে এইচএসসি পাশ করে রাজশাহী কলেজ থেকে সোশ্যাল ওয়ার্ক বিষয়ে এমএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর ২০২০সালে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পোষ্য কোটায় আবেদন করেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে রাজশাহীর সপুরা এলাকায় বিয়ে করেন। এরপর ২০২৩ সালের জানুয়ারির ২২তারিখে নিয়োগ পেয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে বাবা আনিছুর রহমানের বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
এই বিষয় নিয়ে উপজেলার শিক্ষক মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যে সন্তান তার শিক্ষক বাবার উপর সম্পূর্ন নির্ভরশীল সেই সন্তান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে পোষ্য কোটার সুবিধা পাবেন। অথচ শিক্ষক সবনম মোস্তারী যদি তার বাবার উপর সম্পূর্ন নির্ভরশীল হতো তাহলে সে চারকিতে যোগদানের পরই বিয়ে করতে পারতেন। কিন্তু সবনম বাবার উপর সম্পূর্ন ভাবে নির্ভরশীল নয় বলে চাকরিতে যোগদানের আগেই বিয়ে করেছেন। তাহলে সে কিভাবে পোষ্য কোটার সুবিধা পেতে পারেন। বর্তমানে উপজেলা জুড়ে এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই জানান, আনিছুর মাস্টারের মেয়ের সম্পর্ক করে গোপনে বিয়ে হয়েছে ২০২০সালের আগে তাহলে সে কিভাবে পোষ্য কোটায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পায়। আবার অনেকেই মন্তব্য করেন যে বাবা যেহেতু প্রধান শিক্ষক, তাই যেখানে যা করার প্রয়োজন অর্থের বিনিময়ে সেটা করে মেয়েকে অবৈধভাবে শিক্ষক বানিয়েছে।
এই বিষয়ে সহকারি শিক্ষক সবনম মোস্তারী বলেন, আমি যেহেতু আবেদেন করার পরে বিয়ে করেছি। সেহেতু আমি অবশ্যই পোষ্য কোটার সুবিধা পাবো। বাবার কাছে সকল কাগজপত্রের একটি সেট রয়েছে, আপনি চাইলে তা দেখতে পারেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সবনম মোস্তারীর বাবা মোবাইল ফোনে প্রথমে জানান, অমুক দিন উপজেলা শিক্ষা অফিসে আমাদের মিটিং আছে, সেদিন একসেট কাগজপত্রাদি নিয়ে গিয়ে আপনাকে দিবো। আপনি যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। ওই দিন আনিছুরকে পুনরায় মোবাইল করলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন যে, আমি আপনাকে কোন কাগজপত্রাদি দিবো না, আপনি উপজেলা কিংবা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সকল কাগজপত্রাদি আছে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে নেন বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।
রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাদিরউজ্জামান বলেন, আমি সম্প্রতি এই অফিসে যোগদান করেছি। আমি যোগদানের পর ২০২৩ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত কোন শিক্ষকের কাগজপত্রাদি খুজে পাইনি। হয়তো তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা সকল কাগজপত্রাদি সরিয়ে ফেলেছেন। তবে আমি বিষয়টি তদন্ত করবো। তদন্ত করে যদি সবনম মোস্তারীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি সত্য হয়। তাহলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।