বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
কল্পনা করুন আপনি এমন একটি সিনেমা দেখতে পারবেন যা আমাদের জীবনের অন্যতম মৌলিক জীববিজ্ঞানিক প্রক্রিয়াগুলিকে বাস্তব হিসাবে প্রদর্শন করে। প্রথমবারের মতো, গবেষকরা এমন একটি আণবিক সিনেমা তৈরি করেছেন যা দেখিয়েছে কীভাবে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেলুলার প্রক্রিয়া ট্রান্সক্রিপশন এবং ট্রান্সলেশন ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে কাজ করছে।
সব জীবের মধ্যে, ডিএনএ সেই কোড ধারণ করে যা সেলুলার কাঠামো এবং কার্যাবলী নির্ধারণ করে। একটি এনজাইম, যার নাম আরএনএ পলিমেরেস, এই কোডকে ডিকোড করে এবং তা আরএনএ-তে রূপান্তরিত করে, যা ডিএনএর মতোই একটি আণবিক কণা। ডিএনএ থেকে আরএনএতে জীবনের কোডের এই স্থানান্তরটিকে বলা হয় ট্রান্সক্রিপশন। এরপর, একটি আণবিক মেশিন, যার নাম ‘রাইবোসোম’, আরএনএতে থাকা কোষ ব্যবহার করে প্রোটিন তৈরি করে। এই প্রোটিনগুলি আমাদের কোষের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় ট্রান্সলেশন।
বাকটেরিয়ার সেলে, ট্রান্সক্রিপশন এবং ট্রান্সলেশন একই সেলুলার স্থানে ঘটে,” ব্যাখ্যা করেছেন অলিভিয়ার ডাস, এমবিল হাইডেলবার্গের গ্রুপ নেতা এবং এই নতুন গবেষণার সিনিয়র লেখক। “মানব কোষে, ট্রান্সক্রিপশন নিউক্লিয়াসে ডিএনএ যেখানে সংরক্ষিত থাকে, সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকে। বাকি কোষের অংশ থেকে একটি ঝিল্লি দ্বারা আলাদা হয়। তারপর ট্রান্সক্রিপ্ট করা আরএনএটি নিউক্লিয়াসের বাইরের সাইটোপ্লাজমে পাঠানো হয়, যেখানে প্রোটিন তৈরির জন্য এটি ট্রান্সলেট করা হয়। কিন্তু ব্যাকটেরিয়াল কোষের কাঠামো অনেকটাই সাদামাটা, এবং তাদের নিউক্লিয়াস নেই, যার ফলে ট্রান্সক্রিপশন এবং ট্রান্সলেশন শুধু একই জায়গায় হয় না, একে অপরের সঙ্গে একই সময়ে ঘটে।”
গবেষকরা এর আগে ট্রান্সক্রিপশন এবং ট্রান্সলেশনকে আলাদা প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তবে দুটি প্রক্রিয়া একে অপরের সঙ্গে কীভাবে কাজ করে, তা এখনও বোঝা যায়নি।
তবে এই নতুন আণবিক সিনেমার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা রিয়েল টাইম ট্রান্সক্রিপশন এবং ট্রান্সলেশনের সম্পর্ক এবং তাদের সমন্বয় প্রক্রিয়াটিকে দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। এই আবিষ্কারটি শুধুমাত্র জীববিজ্ঞান ও মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি নতুন ধরনের ওষুধ তৈরির গবেষণায়ও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সাহায্য করবে।
তথ্যসূত্র: আজকাল অনলাইন