বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত এলাকা এখন ‘গাজা’ আশা নেই, ভরসা নেই গাজাবাসীর কী উপায়?

আপডেট: জুন ২, ২০২৫, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীর দেশে দেশে সংঘটিত দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও যুদ্ধের ডামাডোলে ইসরাইল হামলায় বিধ্বস্ত গাজার মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতি আড়ালে চলে গেছে। বিশ^ নেতৃবৃন্দ তাদের নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধারে ব্যাপৃত হয়েছে অথচ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসলাইলের হামলায় মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হচ্ছে সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করছেন না। এমন কি প্রভাবশালী মুসলিম দেশগুলোও নিরব থেকে বরং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উচ্চ মাত্রায় নিতে সরব সমঝোতা বজায় রেখেছে। খাদ্যের অভাবে ফিলিস্তিনি শিশুরা মৃত্যুও কোলে ঢোলে পড়ছে- সেই মুহূর্তে কাতারের আুিমর যুক্তরাষ্ট্রেন প্রেসিডেন্টকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ম্যূল্যের বিমান উপহার দিচ্ছেন। অথচ এই যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে ইসরাইল গাজার জীবন ও সম্পদের ধ্বংস-মত্ততায় লিপ্ত হয়ে হয়ে আছে।
বিশ্বে অনেক মানুষ খাদ্যাভাবে মারা যায়। অনেক মানুষ অনাহারে দিন কাটায়। কিন্তু এমন একটি এলাকা আছে যে এলাকার প্রায় সবাই প্রতিদিন খাবার না পাওয়ার আশঙ্কায় থাকে। এলাকাটির নাম গাজা উপত্যকা। চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে সব ধরনের সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে গাজায় অনাহার, অপুষ্টি ও মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহভাবে বেড়েছে। গাজা উপত্যকা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে খাদ্যসংকটপূর্ণ ও ক্ষুধার্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রদানকারীরা গাজা অব্যাহত বিমান হামলা, অপুষ্টি, বাস্তুচ্যুতি এবং জনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছেন। গাজার অন্তত ৭৫ শতাংশ এলাকে ধ্বসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এসব ভূখ- কৃষি কাজের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জীবিকা সম্পূর্ণরূপে খাদ্য সহায়তা প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করেছে। ইতোমধ্যেই ক্ষুধায় বেশ কিছু শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি এতোই ভয়াবহ যে, ত্রাণ নেয়ার সময়ও ইসরাইলি বাহিনি গুলি করে ফিলিস্থিতিদের হত্যা করছে। এই পরিস্থিতি মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন।
গত দেড় বছরে ইসরায়েলি অভিযান ও হামলায় গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষ। নিহতদের মধ্যে প্রায় ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু। মানবিক এই বিপর্যয় ঠেকাতে হলে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব নিয়েই এগিয়ে আসতে হবে। এই মুহূর্তে দুটি পদক্ষেপ অগ্রাধিকার বিবেচনার দাবি রাখে। প্রথমতঃ অবরুদ্ধ গাজাবাসীকে খাদ্য ও ওষুধ সহায়তা দিয়ে তাদের জীবনের সুরক্ষা দেয়া এবং দ্বিতীয়তঃ ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ