শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন দাওয়াত ও তাবলীগ উলামায়েকেরাম ও সাধারণ সাথীরা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) প্রেসক্লাবে ‘দাওয়াত ও তাবলীগের উলামায়েকেরাম ও সাধারণ সাথীবৃন্দ’ কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সন্মেলনে কাকরাইল মসজিদের খতিব আজিম উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, দাওয়াতে তাবলিগ বিশ্বব্যাপী একটি অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ সংগঠন। এ দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে লক্ষ-কোটি মানুষ ইসলামের পথে এসেছেন এবং হেদায়েত লাভ করেছেন।
বিশ্বব্যাপী এই দাওয়াতি সংগঠনের বাৎসরিক সম্মেলন বা বিশ্ব ইজতিমা প্রায় ৫৭ বছর ধরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আসন্ন বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তথাকথিত ‘জুবায়েরপন্থি’ তাবলিগের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ দেশের কতিপয় উলামায়েকেরামকে বিভ্রান্ত করে ও মাদরাসার কোমলমতি ছাত্রদের ব্যবহার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে।
তিনি বলেন, ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের আয়োজিত প্রোগ্রাম থেকে অসংখ্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। অথচ আমরা ৩ নভেম্বর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের আলেমদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছি।
তবে জুবায়েরপন্থীদের উসকানিতে কতিপয় অদূরদর্শী আলেম আপসমূলক সমাধানে না এসে তাবলিগ ও বিশ্ব ইজতেমা ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছেন এবং পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার হীনচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমরা জাতির সামনে বিষয়টি স্পষ্ট করার লক্ষ্যে সমাধানমূলক প্রস্তাব পেশ করছি। তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির সাদ কান্ধলভী ও নিজামুদ্দীন মারকাজের অনুসারী তাবলিগ জামাত সম্পর্কে যে অসত্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, তা নিয়ে ৭টি শর্তের ভিত্তিতে ওপেন চ্যালেঞ্জের প্রস্তাব দিচ্ছি।
১. দারুল উলুম দেওবন্দের মাওলানা আরশাদ মাদানী ও পাকিস্তানের শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকি উসমানীসহ ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ আলেমগণ বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
২. সরকারের উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
৩. গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন এবং এটি রেকর্ড ও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
৪. সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৫. উভয়পক্ষের নির্দিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
৬. বিতর্কটি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।
৭. বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
এসময় তারা যেসব দাবি উপস্থাপন করেন সেগুলো হলো:
১. বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
২. বিগত ৭ বছরের বৈষম্য দূর করে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব নিজামুদ্দীন মারকাযের অনুসারী মূলধারার তাবলিগি সাথীদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া।
৩. কাকরাইল মসজিদ ও বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের বৈষম্য দূর করে তাবলিগের মূলধারার সাথীদের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া।
৪. ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে মূলধারার ২ জন সাথীকে হত্যা ও পরবর্তী সময়ে কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ঢাকা নিউ মার্কেটে ৩ জন সাথীকে হত্যা ও চার শতাধিক সাথীকে মারত্মক আহত করার দায়ে জুবায়েরপন্থীদের নামে দায়েরকৃত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির করা।
৫. সারা বাংলাদেশের সব মসজিদে ধর্মীয় উস্কানি ও ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত সৃষ্টি হয়- এমন বক্তব্য নিষিদ্ধ করা।
তথ্যসূত্র: জাগোনিউজ