রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) বাবা সিদ্দিকিকে খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতে ৬৬ বছর বয়সি নেতাকে গুলি করে খুন করা হয়। তাঁর বুকে এবং পেটে গুলি লেগেছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
সিদ্দিকি খুনে মুম্বইয়ের গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের যোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রবিবার সকালে মুম্বই পুলিশের তরফে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম কর্নেইল সিংহ এবং ধরমরাজ কাশ্যপ। এক জন উত্তরপ্রদেশ এবং এক জন হরিয়ানার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে দু’জনই স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁরা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের ছাত্রী আবাসে শুক্র রাতে পাঁচিল টপকে ঢোকেন লক্ষ্মীকান্ত! সিসিটিভিতে মিলল প্রমাণ
শনিবার রাতে বান্দ্রা পূর্ব এলাকায় ছিলেন বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা। তাঁর পুত্র তথা বিধায়ক জিশান সিদ্দিকির দফতরের বাইরে দাঁড়িয়ে দশেরা উপলক্ষে তিনি বাজি ফাটাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
৯.৯ এমএম পিস্তল থেকে ছোড়া হয়েছিল গুলি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ি করে তিন জন দুষ্কৃতী এসেছিল। তাঁদের প্রত্যেকের মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা ছিল। মোট তিন রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছিল। সিদ্দিকির বুকে এবং পেটে গুলি লাগে।
একটি গুলি আটকে যায় বুকে। ঘটনাস্থলেই তিনি পড়ে যান। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। চিকিৎসকেরা জানান, শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত বেরিয়ে গিয়েছিল সিদ্দিকির। সেই কারণে বুলেট বার করা গেলেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রাত ১১.২৭ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
দু’জনকে গ্রেফতার করলেও তৃতীয় দুষ্কৃতীকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। সে ঘটনাস্থল থেকেই পালিয়ে গিয়েছিল। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন, যাঁরা এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শনিবার রাতের এই ঘটনার পর মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত রবিবারের সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছেন। তিনি রাতে মুম্বইতে ছিলেন না। দ্রুত সেখানে পৌঁছনোর কথা রয়েছে তাঁর।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতেই কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ত্যাগ করেন সিদ্দিকি। যোগ দেন অজিত শিবিরে। তবে তার আগে প্রায় পাঁচ দশক কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন সিদ্দিকি। সত্তরের দশকে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন থেকে মূল স্রোতের রাজনীতিতে এসেছিলেন সিদ্দিকি।
১৯৯৯ সালে প্রথম বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বান্দ্রা এলাকার এই নেতা। ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিন বার ভোটে জিতলেও ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে বান্দ্রা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে তিনি হেরে গিয়েছিলেন।
বলিউডের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ নিয়ে চর্চা রয়েছে মুম্বইয়ে। বিভিন্ন সময়ে তাঁর দেওয়া পার্টিতে বলি তারকাদের দেখা গিয়েছে। ২০১৩ সালে তাঁর পার্টিতেই ‘মানভঞ্জন’ হয় শাহরুখ খান এবং সলমন খানের। দুই খানকে দু’পাশে নিয়ে তোলা তাঁর সেই ছবি স্মরণীয় হয়ে আছে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন