সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:রমজানের আগে সব ধরনের নিত্যপণ্যর দাম বেড়ে গিয়েছিল। ইদের এক সপ্তাহ থাকতে বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন ধরনের মশলার দাম। সাথে বেড়েছে মুরগির দামও। তবে বাজারে গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়েনি।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এদিন বেশকিছু সবজির দামও কম দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভরা মৌসুম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম কমে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে নেমেছে। কমেছে বেগুন, শসা, লেবুর দামও। ইদ ঘনিয়ে আসায় সেমাই-চিনির বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে। কমেনি খেজুর, ডাল, তেলের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতে কমলে আমরাও কম দামে ভোক্তাদের দিতে পারব।
তবে নগরীর সাহেববাজার মাস্টারপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, পেঁয়াজ পাইকারিতে কমে এখন ৪০-৪২ টাকা কেজি। ফলে খুচরা বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। সাহেববাজারসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে ভোক্তাদের ৪৫-৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সাহেববাজারের সবজি বিক্রেতা ইয়াসিন আলী বলেন, মোকামে দাম কমেছে। ৪৫ টাকায় কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। আগের চেয়ে দাম অনেক কমেছে। এখন ৫০ টাকা কেজি।
তবে কমেনি আলুর দাম। আড়তে ৩৪-৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই আলু ভোক্তাদের ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে কিনতে হয়েছে। আলু ৪০-৪৫ টাকা কেজি। দেশি রসুন ১৩০ টাকা, চায়না রসুন ২০০-২১০ টাকা ও আদার কেজি ২০০-২১০ টাকা।
গেল সপ্তাহের থেকে এই সপ্তাহে মুরগির দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। ব্রয়লার ২২০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সাদা লেয়ার ৩২০, লাল লেয়ার ৩৫০ দেশি মুরগি ৫৮০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, ‘মুরগির দাম পাইকারি থেকে বেড়েছে। সরবরাহ কমে গেলেই দাম বাড়ে।’
এছাড়াও গরুর মাংস ৭৫০, খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাসে ডিমের দাম কমেছে। ১৩০-১৪০ টাকা ডজনের ডিম বর্তমানে ১১০-১২০ টাকা। সাদা ডিমের ডজন ১১০ ও লাল ডিম ১২০ টাকা।
আগের মতোই রয়েছে মাছের দাম। রুই-কাতলা আকারভেদে ২৬০-৫০০ টাকা কেজি, পাঙাশ ২০০-২৫০, তেলাপিয়া ২২০-২৫০, কৈ ২৫০-৪০০, শিং ৫০০-৬৫০, মলা মাছ ৪০০-৫০০, বাইন ৪০০-৬০০, মাগুর ৪০০-৬০০, ট্যাংরা ৪৫০-৭০০, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা, ও ইলিশ মাছ আকারভেদে ৯০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি। তবে বড় সাইজের ইলিশের দাম আরও বেশি, ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি।
রমজানে অযৌক্তিকভাবে চালের দাম কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়ে গেছে। ইদ ঘনিয়ে এলেও কমছে না। নতুন ধান না আসা পর্যন্ত কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। বিভিন্ন বাজারে মিনিকেট চাল ৭০-৭৫ টাকা, আঠাশ চাল ৬০ টাকা ও মোটা চাল ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও পোলাওয়ের চাল ১০০-১৪০ টাকা কেজি। তবে প্রাণ, এসিআই, এরফানসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোলাওয়ের চাল বেশি দাম ১৭৫-১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সাহেববাজারে পিন্টু স্টোরের বিক্রেতা পিন্টু বলেন, বস্তার পোলাওয়ের চালের কেজি সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা কেজি। তবে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এই চালের কেজি ১৭৫-১৮০ টাকা। ইদ ঘনিয়ে আসায় সেমাই, চিনি, পোলাওয়ের চালের বিক্রি বেড়েছে।
রমজান উপলক্ষে ব্যাপকভাবে ছোলা, তেল, গম আমদানি করা সত্ত্বেও এক পয়সা কমেনি। ছোলা ১১০ টাকা কেজি, দুই কেজির আটা ১১০ টাকা এক লিটার তেল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটার ৭৯০ টাকা, মসুর ডাল ১৪০ টাকা কেজি। আগে বেশি দামে বিক্রি হলেও ইদের আগে হঠাৎ করে খোলা চিনির দাম কমেছে। বিভিন্ন বাজারে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্যাকেট চিনি ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও জিরার দাম কমে ৬৫০ টাকা কেজি, দারুচিনি ও লবঙ্গের কেজি ১ হাজার ৫৫০ টাকা। তবে কিশমিশের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে। আগে ৫৬০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে বেড়ে ৬৫০ টাকা হয়ে গেছে।
রোজার আগেই খেজুরের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল। ইদ ঘনিয়ে এলেও দাম কমছে না। সরকার ১৮০ টাকা জাহিদি খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তা ২২০ টাকা, বরই খেজুর ৪২০ টাকার কমে পাওয়া যায় না। তিউনিশিয়া ৬০০-৬৫০ টাকা, মরিয়ম ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা, মেডজুল ১ হাজার ৩৫০ টাকা কেজি।
তবে মাসের ব্যবধানে কৃষিপণ্যের মধ্যে বেগুন, শসা ও কাঁচামরিচের দাম কমেছে। বর্তমানে বেগুন ৩০-৪০ টাকা। কাঁচামরিচ ৫০-৭০ টাকা, শসা ৪০ টাকা কেজি ও লেবুর হালি ৩০-৪০ টাকা। রোজার আগে কাঁচামরিচের দামও বাড়তে শুরু করেছিল। ১০০ টাকার শসা বিভিন্ন বাজারে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।লেবুর দামও আগের চেয়ে কমেছে। আগে ৫০-৬০ টাকা হালি বিক্রি হলেও এখন ২০-৩০ টাকা, টমেটোর কেজি ৩০-৪০ টাকা।