রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
প্রশ্রয়দাতাদের তালিকা আগে হোক
সারা দেশেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে কিশোর গ্যাং। দেশের জন্য অন্যতম বড় সমস্যাও এটি। সহসা এই সমস্যার সমাধান অনুসন্ধান করা না গেলে এই কিশোর গ্যাঙের সদস্যরা এক সময় দেশে ভয়ঙ্কর অপরাধী হিসেবে সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। পর্যায়ক্রমে অপরাধ ভয়াবহ পরিস্থিতিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবর আরো ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য দিচ্ছে। বলা হচ্ছে- রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং। কোনো কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে সারা দেশে গ্রাম পর্যন্ত কিশোর গ্যাঙের তৎপরতা বাড়ছে। খুন, ধর্ষণ, মাদক চোরাচালান, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে কিশোররা। মেয়েদের উত্ত্যক্তকরণ ও আধিপত্য নিয়ে বিরোধে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিচ্ছে তারা। কিশোর অপরাধ দমনে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে নানাভাবে চেষ্টা করেও পেরে উঠছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ডাটাবেজ তৈরির কাজ চললেও মিলছে না সুফল। রাজনৈতিক দলের দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও একশ্রেণির জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় থেকে পাড়া-মহল্লা, অলিগলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। মোটরসাইকেল নিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে বেড়ানোর কারণে সবার কাছে আতঙ্কের নাম এখন ‘কিশোর গ্যাং’।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি কঠোর হস্তে কিশোর গ্যাং দমন করার সুপারিশ করেছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
কিশোর গ্যাঙের দ্রুতগতির বাড়-বাড়ন্তের লাগাম টেনে ধরাই এই মুহূর্তে প্রথম চ্যালেঞ্জ। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনির একার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সদিচ্ছা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সংবাদ মাধ্যমে কিশোর গ্যাঙের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী হিসেবে রাজনৈতিক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের প্রসঙ্গ এসেছে। এটির সুরাহা না হলে কার্যকর কোনো সুফল পাওয়া দুষ্করই হবে। ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্থলা বাহিনির কিশোর গ্যাঙের বিরুদ্ধে নেয়া উদ্যোগ ব্যর্থ হতে বসেছে। রাজনৈতিক দল ও জনপ্রতিনিেিধর পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে সফল হওয়াটা দুরাশাই বটে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি কঠোর হস্তে কিশোর গ্যাং দমনের সুপারিশ কার্যকর করতে হলে রাজনৈদিক দল কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কে বা কারা কিশোর গ্যাংকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদের তালিকাটা আগে হওয়া বাঞ্ছনীয়। তারপরেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা সম্ভব হলে বেপরোয়া কিশোর গ্যাঙের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে। উদ্যোগটা ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে আগে শুরু করতে হবে।