মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এখন পর্যন্ত প্রায় সতেরশ মামলায় তিন হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; যাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাসহ ৭৪ জন ‘হাই প্রোফাইল’ ব্যক্তি থাকার তথ্য দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে পালাবদলের পর জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে পুলিশের ‘প্রতিশ্রুতির’ কথা তুলে ধরে বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।
রোববার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, এসব মামলায় শুধু অক্টোবরের ১৩ দিনেই তিন হাজার ১৯৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
“বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে ছাত্র-জনতাকে নির্মমভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাকারী, হত্যার ইন্ধনদাতা ও নির্দেশ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে অদ্যাবধি ১ হাজার ৬৯৫টি মামলা হয়েছে।
“এহেন জঘন্য ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তৎকালীন সরকারি দলের নেতৃস্থানীয় হাই প্রোফাইল ৭৪ জন রয়েছে এই গ্রেপ্তারের তালিকায়।”
গণ আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট দেশে ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তিন দিন পর গঠন করা হয় অন্তর্র্বতী সরকার। এরপর একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে থাকা অন্যদলগুলোর নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
টানা অভিযানে গ্রেপ্তারদের মধ্যে আছেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ, সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য।
গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
রাজনীতিবিদদের বাইরে সাবেক মুখ্য সচিবসহ একাধিক সাবেক সচিব, পুলিশের আইজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন।
তবে গ্রেপ্তার এসব প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী, নেতা, সাবেক সরকারি আমলা ও পুলিশের কর্তাব্যক্তিদের জামিন পেয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী ও এম এ মান্নান।
অভিযান অব্যাহত থাকার কথা তুলে ধরে পুলিশ সদর দপ্তর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বিগত সময়ে রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারসহ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্র-জনতা ও সাধারণ জনসাধারণের এক্ষেত্রে শঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই।
“পুলিশের সেবা হবে হয়রানি মুক্ত, জনবান্ধব। কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয় তা বাংলাদেশ পুলিশ নিশ্চিত করবে।”
বৈষম্যহীন সমাজ গঠন এবং মানুষের সকল অধিকার নিশ্চিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে ‘যুগান্তকারী মাইলফলক’ হিসেবে তুলে ধরে পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, ‘যা সকলের জন্য অমিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে’।
“এ অগ্রযাত্রায় ছাত্র-জনতা ও আপামর জনসাধারণের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনে পুলিশ নিত্য সারথী হয়ে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।”
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ