মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাবি শিক্ষক সমিতি
রাবি প্রতিবেদক:
প্রত্যয় স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)শিক্ষক সমিতি। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই ঘোষণা দেন তারা।
মানববন্ধনে প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভূক্তকরণ এবং স্বতন্ত্র স্কেল প্রবর্তনেরও দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে শিক্ষকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারিও দেন তারা।
মানববন্ধনে প্রত্যয় স্কিমকে প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়ে রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, আজ আমরা উপস্থিত হয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষার জন্য। গতবছর চারটি স্কিমে ২৩ এ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী সার্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। আমরা সেই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। এর ছয় মাস পরে ১৩মার্চ প্রত্যয় স্কিম ঘোষণা করা হয়।
এই সিদ্ধান্তটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য প্রহসনমূলক এক সিদ্ধান্ত। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সে সময় ভেতরের কোনো ষড়যন্ত্র সরকারকে সাংঘর্ষিক অবস্থানে ফেলছে কিনা এবিষয়ে আমরা সন্দিহান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি এই প্রহসনমূলক প্রত্যয় স্কিমকে প্রত্যাখ্যান করছে।
পরবর্তী কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আজ আমাদের দাবি আদায় না হলে আগামী ২৮ মে দুই ঘন্টা কর্মবিরতি, ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি (পরীক্ষসমূহ আওতামুক্ত থাকবে) এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মানিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই বৈষম্যমূলক পেনশনের যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়কে পেনশনের আওতায় না রাখার যে পরিকল্পনা আমাদের সামনে প্রতিয়মান হচ্ছে, আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মানসম্মত গ্র্যাজুয়েট গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। সুতরাং দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে শিক্ষকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হাবীবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ সরকারি চাকুরিজীবী রয়েছে, যাদের সকলের পেনশনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেনশনের বাহিরে রেখে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তার দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।
মানববন্ধনে রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সরকারের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম-২ ও একই বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমীরুল ইসলাম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাঊদ, হল প্রাধ্যক্ষ, অনুষদ অধিকর্তাসহ বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।