‘ব্রেক্সিটের’ আদলে ‘ডেক্সিট’? ইউরোপিয় ইউনিয়ন ছাড়ার দাবি জার্মানিতেও!

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :৪৭ বছর পরে ২০২০ সালে ইউরোপিয় জোট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল ব্রিটেন। বেরিয়ে গিয়েছিল বাণিজ্য জোট থেকেও।
১৯৭৩ সালে ‘ইউরোপীয় ইকনমিক কমিউনিটি’-তে যোগ দিয়েছিল ব্রিটেন। যা ১৯৯২ সালে ইউরোপিয়
এ বার ব্রিটেনের মতোই ইউরোপিয় জোট ছাড়ার দাবি তুলেছে জার্মানির দক্ষিণপন্থী দল ‘অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)’! ওই দলের প্রস্তাব, ব্রিটেনের মতো ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া উচিত জার্মানিরও।

তবে ‘ব্রেক্সিট’ নয়, পদক্ষেপের নাম হবে ‘ডেক্সিট’Ñদাবি করেছে এএফডি।
বিরোধী দল হওয়া সত্ত্বেও কেন এত গুরুত্ব পাচ্ছে এএফডি। প্রধান বিরোধী দল না হলেও অন্যদের পিছনে ফেলে কয়েক বছরের মধ্যে বিরোধী দলগুলির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এএফডি।

জার্মানিতে দলটির জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে কয়েক বছর ধরে। ফলে তাদের তোলা দাবি প্রসঙ্গে মতামত দিয়েছে সরকার।
এএফডির দাবির বিরোধিতা করেছেন জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার। তিনি জানান, ইউরোপিয় ইউনিয়নের একক বাজার জার্মানির জন্য ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’। তাই জার্মানি ইউরোপিয় জোট থেকে বেরিয়ে এলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হবে।
ইউরোপের মধ্যে বৃহত্তম অর্থনৈতিক কাঠামো রয়েছে জার্মানির। কিন্তু ইউরোপিয় জোট থেকে বেরিয়ে এলে রফতানি-নির্ভর জার্মানির জন্য তা খারাপ হবে বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী।

ক্রিশ্চিয়ানের ভাষায়, ‘এটি আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করবে৷ এ কারণেই সাধারণ মানুষকে আমাদের বোঝাতে হবে যে, কেউ সরকারি নীতির সঙ্গে সহমত পোষণ করতে না-ই পারেন। তবে সম্পূর্ণ ব্যবস্থা পাল্টে ফেলার কোনো অর্থ হয় না। আমাদের উন্নতি যে নীতির ওপর ভিত্তি করে, তা-ও পরিবর্তন করার কোনো কারণ নেই।’’

জার্মানিকে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন করার দাবি তুলে এএফডি নেতা অ্যালিস উইডেল এক ধাপ এগিয়ে, ব্রেক্সিটকে ‘জার্মানির জন্য মডেল’ হিসাবেও মন্তব্য করেন। তার নাম হবে ‘ডেক্সিট’।
‘ডেক্সিট’ নিয়ে গণভোটের প্রস্তাবও দিয়েছেন উইডেল। তাঁর দাবি, জার্মানি ইউরোপিয় জোটে থাকবে কী না, সে সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত হবে।
এএফডির এই প্রস্তাবকে নাকচ করেছে জার্মানির রাজনৈতির মহলের অন্য একটি অংশ। দেশের অধিকাংশ শিল্পপতিও এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন।
জার্মানি রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠির একাংশের দাবিমতে, এএফডির দৃষ্টিভঙ্গি জার্মানির অর্থনীতিতে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

এএফডির বিরোধিতা করলেও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান জানান, অর্থনৈতিক দিক থেকে জার্মানির প্রতিযোগিতা ‘যতটা হওয়া উচিত, ততটা ভাল নয়।’
অর্থনৈতিকভাবে কীভাবে জার্মানিকে আরো সমৃদ্ধ করা যায়, তা নিয়ে কয়েক মাসের মধ্যে প্রস্তাবনা তৈরি করবে সরকার৷
জার্মানির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ নিয়ে তিনি আশাবাদী বলেও জানিয়েছেন সে দেশের অর্থমন্ত্রী। ‘খুব শিগগিরই’ আর্থিক দিক থেকে জার্মানির উত্থান হবে বলেও আশা করছেন ক্রিশ্চিয়ান।

‘জি৭’ বা ‘গ্রুপ অফ সেভেন’ বিশ্বের সাতটি উন্নত অর্থনীতির একটি গোষ্ঠী। এই ৭টি দেশ হল- কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, ব্রিটেন এবং আমেরিকা।
উল্লেখযোগ্য যে, জার্মানিই ‘জি৭’-এর একমাত্র দেশ যার অর্থনীতি গত বছর সঙ্কুচিত হয়েছে। দেশের দু’টি বৃহত্তম ঋণদাতা ডোয়চু ব্যাঙ্ক এবং কমার্জব্যাঙ্কের পূর্বাভাস, ২০২৪ সালেও অর্থনৈতিক সঙ্কোচনের মুখোমুখি হতে পারে জার্মানি।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ