ভাইয়ের প্রতারণা মামলায় কলেজ শিক্ষকের সাত বছরের কারাদণ্ড।। বিপরীত মামলায় ভাই ও মা বেকসুর খালাস

আপডেট: মার্চ ১, ২০১৭, ১:০০ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক
ছোট ভাইয়ের দায়ের করা প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির মামলায় রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক শিরিন সুফিয়াকে (৫৫) সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী যুগ্ম মহানগর জজ আদালত-১ এর বিচারক শরিফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়ের করা বিপরীত মামলায় তার ভাই ওবাইদুল মুক্তাদির এবং মা আহাদুন নেসাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন একই আদালত।
শিরিন সুফিয়া নগরীর নওদাপাড়ায় সরকারি বরেন্দ্র কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক। তবে সেখান থেকে সংযুক্তি হিসেবে রাজশাহী কলেজে শিক্ষকতা করতেন। তার স্বামীর নাম মৃত আলতাব হোসেন। তারা নগরীর তালাইমারি এলাকায় থাকতেন। এ মামলায় আলতাব হোসেনও আসামি ছিলেন। তবে তিনি মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান খান রানা বলেন, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির অভিযোগ এনে ২০১৪ সালের ৪ অক্টোবর নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন শিরিন সুফিয়ার ছোট ভাই ওবাইদুল মুক্তাদির। এর বিপরীতে শিরিন সুফিয়াও তার মা আহাদুন নেসা ও ভাই ওবাইদুল মুক্তাদিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আদালতে দুটি মামলা একসঙ্গেই চলছিল। রায়ও হয়েছে একসঙ্গে। আদালত শিরিন সুফিয়ার মামলা থেকে তার মা ও ভাইকে খালাস দিয়েছেন। আর ভাইয়ের মামলায় শিরিনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে তাকে এই দণ্ড দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ওই শিক্ষক আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশ্বজিত বিশ্বাস জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর তার চেকের স্বাক্ষর করা দুটি পাতা চুরি করেছিলেন শিরিন সুফিয়া। কিন্তু বাবার চেক বই থেকে পাতা চুরির ঘটনায় থানায় জিডি করে রাখেন ভাই ওবাইদুল। এরপর শিরিন সুফিয়া চেক দুটি জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা তোলার চেষ্টা করেন। তবে এ সময় ব্যাংক চেক দুটি আটকে দেয়।
এ ঘটনায় ওই দিনই চেক চুরির জিডিটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে পুলিশ। এরপর শিরিন সুফিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে স্বামীসহ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তারা আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর ওই চেকের বিপরীতে বাবাকে চার কোটি টাকা ধার দিয়েছিলেন বলে মা আহাদুন নেসা ও ভাই ওবাইদুল মুক্তাদিরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। দীর্ঘদিন পর দুটি মামলারই একসঙ্গে বিচার কাজ শেষ হলো।