রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
কালীপুজোর রাতে নরবলি! অমাবস্যার আঁধারে দুই শিশুকে বলি দিয়ে উৎসর্গ করতে পারলেই মিলবে তন্ত্রসাধনায় সাফল্য। মনে করা হচ্ছে, এই কারণেই তান্ত্রিকের হাতে প্রাণ দিতে হল উত্তরপ্রদেশের দুই ভাইবোনকে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের দেওবন্দ এলাকায়। ঠিক কী ঘটেছে?
পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সাগর জৈন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রামের বাইরে শ্মশান এলাকায় একটি মন্দিরে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিল দেব নামে ১১ বছরের বালক। তার সঙ্গে যায় তুতো বোন মাহিও (৯)। অনেক রাত হয়ে যাওয়ার পরেও দুজনে বাড়ি না ফেরায় দুশ্চিন্তায় পুলিশের দ্বারস্থ হয় বাচ্চা দুটির পরিবার।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা গোটা গ্রাম ও আশপাশের এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজেও কারও হদিশ পায়নি। এর পর হঠাৎই গ্রামের এক যুবকের বাড়ি থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে রাস্তার উপর পড়ে থাকতে দেখা যায় দেবের দেহ। সেখান থেকে কয়েক পা দূরে একটি খাদের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় মাহির দেহ। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় পুলিশ ও ফরেনসিক দল। দেখা যায় দুজনেরই শরীরে বেশ কয়েকটি হাড়গোড় ভেঙে গিয়েছে। তাদের মাথা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়।
যদিও পুলিশের একাংশের দাবি, গাড়িতে ধাক্কা লেগেও দুই ভাইবোনের মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু সেই দাবি মানতে নারাজ মৃত দুই শিশুর আত্মীয়স্বজন। দেবের পরিবার স্থানীয় শ্মশানের তান্ত্রিকদের দিকেই আঙুল তুলেছে। তাদের অভিযোগ, ওই মন্দির সংলগ্ন শ্মশানে অমাবস্যা নিশিতে তন্ত্রসাধনা করেন কয়েকজন তান্ত্রিক।
তাঁরাই নরবলির উদ্দেশ্যে একলা মন্দিরে যাওয়া দুই ভাইবোনকে হত্যা করেছেন। অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে গ্রামবাসীরা শিশু দুটির দেহ নিয়ে দেওবন্দ-নানোটি সড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার পর উঠে যায় অবরোধ।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই শিউরে উঠেছে দেশের মানুষ। যদিও উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার এখনও এই ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ফরেনসিক তদন্তের পাশাপাশি, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে ঘটনার প্রকৃত কারণ বোঝা যায়।
প্রসঙ্গত, মোক্ষলাভের লোভে ছোট ছেলেমেয়েদের অপহরণ করে বলি দেওয়ার মতো ভয়াবহ ঘটনা এর আগেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটেছে। বিশেষ করে দীপাবলির রাতে বেশ কিছু গ্রামীণ এলাকার কালীমন্দিরে নরবলির প্রাচীন রীতি এখনও বহাল রয়েছে বলেই মনে করা হয়।
তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন