বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
শাহ মো. জিয়াউদ্দিন
আজ ১ ফেব্রুয়ারি। শুরু হলো ভাষার মাস। বাঙালি জাতির কাছে ফেব্রুয়ারি মাসটি ভাষার মাস হিসাবেই গুরুত্ব বহন করে। ফেব্রুয়ারি মাসটি শুধু মাতৃভাষা আন্দোলনের মাসই বললে বিষয়টা সীমিত হয়ে যাবে, এই মাসটিতে বাঙালি জাতি নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতির, জাতীয়তাবোধের স্বাধীন সত্ত্বাটি প্রতিষ্ঠা করেছে। চল্লিশ দশকের প্রগতিশীল লেখকেরা বাঙালিদের মাঝে জাতীয়তাবোধের অভাবের কথাটি বলেছেন তাদের বিভিন্ন লেখায়। ১৯৪৭ সালের ২৯ জুন কলকাতার দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধের অংশ বিশেষে বলা হয়েছিল, “বাঙালীর জাতীয়তাবোধ এখনো পরিপূর্ণভাবে স্ফুরিত হয় নাই। তাঁর জাতীয় মর্যাদাবোধ এখনো কাচা, তাঁর পূর্ণ জাতীয় ব্যাক্তিবোধ এখনো অপ্রতিষ্ঠিত। এই কারণেই বাঙালিরা সাধারণত বুঝতে পারে না যে, নিজ বাসভূমেও ইংরেজ তথা অবাঙালীদের সাথে তাদের ভাষায় কথা বললে নিজেকে ছোট করা হয়, নিজের অর্মাদা হয়, নিজের ব্যক্তিত্বকে বির্সজন দেয়া হয়। ইংরেজদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলার অর্থ এই নয় যে, ইংরেজি আমাদের রাষ্ট্র ভাষা এবং ব্যবহারিক জীবনে ইংরেজির মর্যাদা অনেক বেশি। এই কারণ আমাদের অস্ফুরিত জাতীয়তাবোধ, অস্ফুরিত জাতীয় মর্যাদাবোধ। তা নইলে নিজেদের মধ্যে বাঙালীরা কখনোই ইংরেজিতে কথা বলতেন না এবং বলতে পেরে আত্মপ্রসাদও অনুভব করতেন না। বাংলা বলতে পারিনে, বাংলায় কিছু লিখতে পারিনে, বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে পারিনে বলে লজ্জার পরির্বতে আত্মপ্রসাদ অনুভব করতেন না। জাতীয় মর্যাদাবোধ ক্ষীণ বলেই এবং সেই মর্যাদাবোধের অঙ্গস্বরূপ বাংলা ভাষার মর্যাদাবোধ অতি ক্ষীণ, উর্দু-হিন্দি ভাষীদের সঙ্গে বাঙালীরা বাংলার পরিবর্তে উর্দু-হিন্দী বলার দায়িত্ব স্বেচ্ছায় নিজেদের ঘাড়ে নিয়ে থাকেন।” এই লেখাটি থেকে তৎকালীন সময়ের বাঙালির জাতীয়তাবোধের সার্বিক অবস্থা বুঝা যায়। ১৯৪৭ সালের ৩ জুন তারিখে ভারত বিভক্তির কথা ঘোষণা করেন তৎকালীন বৃটিশ উপনিবেশিক ভারতের বড়লাট লর্ড মাউন্টব্যাটেন। তার এই ঘোষণাকে সমর্থন দিয়ে বেতার ভাষণ দেন প-িত জহরলাল নেহেরু, মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ এবং সরদার বলদেব সিং। উপমহাদেশ থেকে বৃটিশ তাড়ানো আন্দোলনে বাঙালিদের অবদান যে কোন জাতির চেয়ে বেশি অথচ সেই সময়ে উপমহাদেশ ভাগ করার ব্যবস্থাপনায় বাঙালি বুদ্ধিজীবী বা বাঙালি রাজনৈতিকদের উপস্থিতিটা ছিল না। তাই দেখা যায়, ১৯৪৭ সালের ১৪-১৫ আগস্ট তথাকথিত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান ও ভারত দুইটি রাষ্ট্র হিসাবে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হয়। এর ফলে সৃষ্ট রাষ্ট্র কাঠামোয় বাঙালি জাতি সত্তার বিষয়টি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ছিল বাঙালি তারপরও রাষ্ট্রযন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ বাঙালিদের হাতে ছিল না। যাদের হাতে রাষ্ট্রের স্টিয়ারিংটা ছিল তারা সবাই অবাঙালি। তাই নিয়ন্ত্রকরা বাংলা ভাষাকে গুরুত্বহীন মনে করেন। বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদার বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি শুরু হয় ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসের দিকে। বিশেষ করে এই সময়টায় বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় রূপ দেয়ার দাবির বিষয়ে তৎকালীন রাজনৈতিকবিদদের চাইতে লেখক কবি বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্ররাই ভূমিকা ছিল মুখ্য। রাজনৈতিক দল বলতে কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগ আর কমিউনিস্ট পার্টি। কমিউনিস্ট পার্টি প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে পারতো না। তবে কমিউনিস্টরা ভাষা আন্দোলনে আন্ডার গ্রাউন্ডে থেকে বিরাট অবদান রাখেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর যখন রাষ্ট্র ভাষা কী হবে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয় তখন উর্দুভাষী বুদ্ধিজীবীরা সিদ্ধান্ত দেন যে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। তৎকালীন সরকার পাকিস্তানের সেই বুদ্ধিজীবীর কথা বহাল রাখে। তবে পাকিস্তান সৃষ্টির সূচনা শুরু হওয়ার সময় আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন ( তিনি একজন উর্দু ভাষী ) জিন্নাহকে পরামর্শ দিয়েছিলেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষাটি যেন উর্দু হয়। তখন এই উপমহাদেশের যে কোন ভাষাভাষির চাইতে বাংলা ভাষার সাহিত্য সংস্কৃতি ছিল সমৃদ্ধ। বিশ্ব জুড়ে বাংলা ভাষার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানে যখন এধরনের জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছিল তখনই পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষাভাষি বুদ্ধিজীবীরা এর প্রতিবাদ জানায়। অন্যদিকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভার শিক্ষা মন্ত্রী ফজলুল রহমান উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা করার জন্য নানা ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালান। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিক। তার এ ধরনের প্রচেষ্টার মাঝে ছিল তিনি বাংলা ভাষাকে আরবি হরফে লেখার। তিনি আরবি হরফে বাংলা লেখার জন্য পাকিস্তান শিক্ষা কাউন্সিলে সুপারিশ করেন। এ ধরনের কর্মকা- প্রতিহত করতে বাঙালিরা তাদের আন্দোলন শুরু করে। ১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য ছাত্রসভার আয়োজন করা হয়। ছাত্র সভার পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত থাকে। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের গণপরিষদের অধিবেশনে ইংরেজি এবং উর্দুতে ভাষণ দেয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। গণপরিষদের সেই অধিবেশনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস দলের গণপরিষদের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এ প্রস্তাবে সংশোধনী এনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম ভাষা করার দাবি জানান। তিনি তাঁর বক্তব্যে সেই অধিবেশনে বলেছিলেন যে, পাকিস্তানের ৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ হলো পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসী, যাদের মাতৃভাষা হলো বাংলা- তাই বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ পাকিস্তানের গণপরিষদের ভাষা তালিকা থেকে বাংলাকে বাদ দেয়া হয়। ডাকটিকেট এবং মুদ্রায় বাংলা ভাষা না রাখা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এর প্রতিবাদে ওই দিন ঢাকায় পালিত হয় সাধারণ ধর্মঘট। ১১ মার্চ ধর্মঘট আহবানকারীদের দাবি ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হিসাবে ঘোষণা করা। ধর্মঘটের পক্ষে “রাষ্ট্রভাষা বঙলা চাই” শ্লোগানে মিছিল করার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শওকত আলী, কাজী গোলাম মাহাবুব, সামসুল হক, অলিআহাদ, এবং আব্দুল ওয়াহেদ গ্রেপ্তার হন। গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবিতে ১২-১৫ মার্চ ধর্মঘট পালিত হয়্। বাঙালি জাতির জাতীয়তাবোধের বিষয়টি নিয়ে যারা প্রশ্ন করেছিল তারা এ ধরনের আন্দোলন দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান। ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। তিনি দুই জায়গায় তার ভাষণে বলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। আর তার এই ভাষণের প্রতিবাদে সারা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তৎকালীন পূর্ববাংলার ( পূর্ব পাকিস্তান) প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকা ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে। বাঙালির জাতীয়তার চেতনার বিকাশ ঘটে বিদ্যুৎ স্ফূলিঙ্গের ন্যায়। ১৯৫০ সালের ১১ মার্চ প্রখ্যাত বাম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল মতিন এর নেতৃত্বে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এই পরিষদের আহবায়ক নির্বাচিত হন আব্দুল মতিন। অল্পদিনের মধ্যেই রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের কর্মকা- দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একটা ব্যাপার লক্ষণীয় ছিল, তা হলো ১৯৫১ সালের আদম শুমারি অনুসারে দেখা যায়, পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৪.৬ শতাংশ ছিল বাঙালি, ২৮.৪ শতাংশ ছিল পাঞ্জাবী, ৭.২ শতাংশ ছিল উর্দু, ৫.৮ শতাংশ ছিল সিন্ধি, ৭.১ শতাংশ ছিল পশতু, ১.৮ শতাংশ ছিল ইংরেজি (কিছু মানুষ নিজেকে দুইটি ভাষা জানে বলে গণনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে যোগফলটা ১০৪.৯ এ দাঁড়ায়)। তবে রাষ্ট্র ভাষা উর্দু করার প্রতিবাদে তৎকালীন পাকিস্তানের অন্য কোন অঞ্চলে আন্দোলন দানা বাধতে পারেনি। একমাত্র পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ সংক্ষুব্ধ হয়ে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল মিটিং অব্যাহত রাখে। রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে এই অঞ্চলের মানুষ ইস্পাতদৃঢ় অবস্থান নেয়। ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ধর্মঘট পালন করে। আন্দোলন যখন তীব্র হতে তীব্রতর হতে লাগল তখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার একটি কৌশল অবলম্বন করে। ফজলুল রহমান সাহেবের উদ্ভাবিত আরবি হরফে বাংলা লিখার প্রস্তাবটি সরকার পেশ করেন। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার মনে করেছিলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে মোট জনসংখ্যা অনুপাতে বেশি মানুষ ইসলাম ধর্ম পালন করেন, তাই তারা হয়তো আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাবটি মেনে নেবেন। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ এই প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং পাকিস্তাান সরকারের সকল প্রস্তাবকে অগ্রাহ্য করে এদেশের মানুষ রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে অনঢ় অবস্থান নেয়। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ৩০ জানুয়ারি সিদ্ধান্ত নেয়, ২১ ফেব্রুয়ারি সারা পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল মিছিল, বিক্ষোভ পালন করার। ২০ ফেব্রুয়ারি সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেন। তবে কিছু সংখ্যক নেতা দ্বিমত পোষণ করলেও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্ররা। পরের দিন ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের একাংশে অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্রদের সভা শুরু হয়। সভা শুরু হলে সভাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকসহ উপাচার্য আসেন। তারা ছাত্রদের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার অনুরোধ জানান। তবে ছাত্র নেতাদের মধ্যে আব্দুল মতিন এবং গাজী উল হক ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অবস্থানে অনঢ় থাকেন। ঢাকা শহরের হাজার হাজার ছাত্র আমতলার সভায় সমবেত হয়। ছাত্ররা পাঁচ-সাতজনের ছোট ছোট দলে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ এই শ্লোগানে রাস্তায় বেরিয়ে আসলে পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে। ছাত্রীরাও পুলিশের নগ্ন আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি। পুলিশ ছাত্রছাত্রীদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করলে ছাত্ররা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারাও পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। সকল প্রকার ব্যারিকেড ভেঙ্গে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানে হাজার হাজার ছাত্র রাস্তায় নেমে পড়ে। পুলিশের বাধা পেরিয়ে ছাত্ররা গণপরিষদের দিকে অগ্রসর হয়। পুলিশ তখন নির্বিচারে ছাত্রদের উপর গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে রফিকউদ্দিন আহমেদ, আব্দুল জব্বার, আবুল বরকত, আব্দুস সালাম শহিদ হন। ওই সময় গণপরিষদের অধিবেশন শুরু করা প্রস্তুতি চলছিল আর রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলনরত ছাত্ররা পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার খবরে আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশসহ বেশ কয়েকজন সদস্য গণপরিষদের অধিবেশন বর্জন করেন।
২১ ফেব্রুয়ারির মর্মান্তিক ঘটনাটি সারা প্রদেশের মানুষের মনে দাগ কাটে। ২১ ফেব্রুয়ারির শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের রক্ত শপথ নিয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। বাঙালি জাতির মনসপটে নিজস্ব জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটে মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে। ১৯৫২ সালে পূর্ব বাংলার (পূর্ব পাকিস্তানের) বাঙালিরা প্রমাণ করে যে, তাদের মাঝে জাতীয়তা বোধের কোন ঘাটতি নেই। বাঙালির জাতীয়তাবাদের বিকাশের ধারায় ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
লেখক:- কলামিস্ট