ভুট্রার গুদাম হিসেবে ভাড়া শ্রেণিকক্ষ

আপডেট: জুলাই ৩১, ২০১৭, ১:৩২ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


জালালাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গুদাম হিসেবে ভাড়া দেয়া শ্রেণি কক্ষ- সোনার দেশ

সাম্প্রতিককালে শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করা। যেটা স্কুলের পাঠের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু নিয়মবর্হিভুতভাবে ক্লাস বন্ধ করে, গুদাম ভাড়া দেয়া হয়েছে স্কুলের শ্রেণিকক্ষ। এমনই ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পশ্চিম প্রান্তে মান্দা থানা ঘেষে জালালাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন থেকে স্কুলের শ্রেণিকক্ষ ভাড়া দেয়া হয়েছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাস না নিয়ে ভুট্টার গুদাম করার অভিযোগ ওঠে। এতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, রানীনগর উপজেলার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৮ নম্বর মিরাজ ইউনিয়নে এই বিদ্যালয়টি অবস্থিত। এ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষটি ২ হাজার টাকায় এলাকার স্থানীয় কৃষক জাহিদুলের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। জালালাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি থানা ও উপজেলা সদর থেকে অনেকটা দুর্গম এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় দেখার কেউ নেই। ইচ্ছা থাকলেও কোন প্রতিকার চাইতে পারে না এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এমতাবস্থায় দীর্ঘদিন থেকে বিদ্যালয়ের এই শ্রেণিকক্ষগুলো ব্যবহার হচ্ছে স্থানীয় এলাকার কৃষকদের দখলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, স্কুলের প্রতিটি শিক্ষক একই গ্রামের হওয়ায় গ্রামবাসীরা চাইলেও কোন প্রতিকার পাই না। বিদ্যালয়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকলেও শিক্ষকদের অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। এই স্কুলের ক্লাসের গুরুত্ব কমিয়ে ভাড়া ব্যবসার প্রহসন চলছে।
এছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসীরা বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় শেণিকক্ষ ভাড়া দেয়া হয়েছে। সেখানে ব্যবসায়ী মৌসুমের ফসল রাখার গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে ভাড়া দেয়ার কারণটা তারাই ভাল জানেন। তবে পুরাতন শ্রেণিকক্ষের পাশে বিদ্যালয়ের আরেকটি নতুন ভবন হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হয়।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল জলিল বলেন, বিদ্যালয়ের এই ঘরটি পুরাতন। সেখানে কোন ক্লাস নেয়া হয় না। বিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার আনুষ্ঠিকতার খরচের জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছে ২ হাজার টাকায়। এছাড়া তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষটি ভাড়া দেয়ার আগে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, স্থানীয় আ’লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার একেএম আমিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে কোন ধরনের ভাড়া দেয়া যাবে না। ভাড়া দেয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই। ঘটনাটি ঘটলে নিয়মবর্হিভূতভাবে ভাড়া দেয়া হয়েছে। সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে বহিরাগতদের ভাড়া দেয়া যাবে না। আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবো বলে তিনি জানান।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ