মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাজনীতিকদেরই উপায় খুঁজতে হবে
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচন বুধবার (৮ মে) সম্পন্ন হয়েছে। সারা দেশেই ভোট শান্তিপূর্ণ ছিল, বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া। এবার দলীয়ভাবে কিংবা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় নি। সবার জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ উন্মুক্ত ছিল। ফলে ইচ্ছেমতই যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দলীয়ভাবে নির্বাচন না হলেও বিএনপি রাজনৈতিকভাবে একেবারে ভোটের আগমুহূর্তে দেশের নেতাকর্মিদের নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। কিন্তু বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিএনপি অংশ নেয়া প্রার্থীদের ইতোমধ্যেই দল থেকে বহিস্কার করেছে।
কিন্তু নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি মোটেও সন্তোষজনক ছিল না। এটা উদ্বেগের বিষয়, ভাববার বিষয়। যদিও নির্বাচন কমিশন ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার জন্য পাঁচটি কারণের উল্লেখ করেছে। তদুপরি নির্বাচন নির্বাচন কমিশন প্রথম দফার ভোটে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। একইভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগও নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট।
প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের হার আগের তিনটি নির্বাচনের চেয়ে কম। ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। বুধবারের নির্বাচনে বিএনপির কিছু ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ থাকলেও তারা তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ভোট হয়েছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। যদিও দলীয়ভাবে নির্বাচন হয়নি।
বৃহস্পতিবার ভোটের হার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ভোটারদের ‘আগ্রহ কমে যাচ্ছে কিনা সেটা তো গবেষণার বিষয়। সেটা আমরা বলতে পারবো না। আমরা বলতে পারবো ভোট কম পড়েছে। এর কারণ হলো ধান কাটার মৌসুম, তার ওপরে বৃষ্টি। এছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ভোটাররা পছন্দের প্রার্থী না পেলেও ভোট দিতে না আসতে পারেন। ভোটের হার কমার আরো অনেক কারণ থাকতে পারে।
ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভোটাদের আগ্রহ যে ক্রমেই নিম্নমুখি হচ্ছে সেটা স্পষ্টতই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটা শুধু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেই নয়- জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই করুণ অবস্থা লক্ষ্য করা গিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য মোটেও শুভ নয়। এরফলে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে কি না সেটাও ভাভবার সময় এসেছে। এই পরিস্থিতির জন্য এককভাবে কোনো রাজনৈতিক দলকে দোষারোপ করে কোনো দলই তাদের দায় এড়াতে পারে না।
জাতীয় রাজনীতির অভ্যন্তরীণ সমস্য্-াসঙ্কট, নেতৃত্বহীনতা সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অক্ষমতা এবং দুরদর্শিতার অভাবকেই দায়ি করা যায়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে জাতীয় রাজনীতির দায়িত্বশীলতাই এই মুহূর্তে জরুরি হয়ে পড়েছে। রাজনীতিকদেরই সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। রাজনীতিতে আত্মঘাতী খেলার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে দেশ ও জনগণের জন্য সমান্তরাল লক্ষ্য নিয়েই জাতীয় রাজনীতির নতুন অভিযাত্রা খুবই প্রয়োজন। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় সকলেরই সমান দায়িত্ব রয়েছে।