ভোলাহাটে লাভের আশায় বারোমাসি তরমুজ চাষে ঝুঁকছে চাষিরা

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩, ১২:৫০ অপরাহ্ণ


বি.এম রুবেল আহমেদ :


ভোলাহাটে লাভের আশায় বারোমাসি তরমুজ চাষে ঝুঁকছে চাষিরা। প্রচণ্ড গরমে তীব্র পিপাসায় সবাই চায় এক গ্লাাস পানি। এসময় এক টুকরো তরমুজ পেলে আর কী লাগে! আর সকলের পছন্দের সেই তরমুজ যদি সারাবছর পাওয়া যায় তাহলে তো কথায় নেই। তাই ভোলাহাট উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে অসময়ের ফসল গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ।

আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভোলাহাট উপজেলায় প্রথবারের মত গতবছর ২০২২ সালে প্রদর্শনী আকারে ২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। সেখানে মাত্র ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ১ লক্ষ টাকার উপর লাভ পেয়েছিলেন কৃষক। ফলে এবছর এই ফসলের আবাদ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো উপজেলায়।

এবছর পাঁচ একরেরও বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের। কৃষক আমিরুল ইসলাম আবাদ করেছেন দুই বিঘা তরমুজ। তিনি বলেন আমি একজন সবজি চাষি। গতবছর একপ্রকার জোর করেই আমাকে দিয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করান উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সুলতান আলী। প্রথমবারেই আমি এক বিঘা জমি থেকে খরচ বাদে ১ লক্ষ টাকার উপর আয় করেছি। সেই বছরই একই জমিতে একই মাচায় দ্বিতীয় বার তরমুজ চাষ করি এবং সেখানেও অনেক লাভ হয়।

ফলে এবার আমি দুই বিঘা জমিতে এই তরমুজ চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ফল ভাল আছে। আশা করছি এবারো লাভবান হতে পারবো। এছাড়াও কৃষক আনসারুল ইসলাম বলেন এই তরমুজ মাত্র ৬০ দিনে বিক্রির উপযুক্ত হয়ে যায়। এত অল্প সময়ে অন্য কোন ফসলে এত বেশি লাভ হয়না বলে আমি এইবার ১ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। সামনের বছর আরো বেশি পরিমানে চাষ করব। কৃষক আশরাফুল বলেন আমি গতবছর এই তরমুজ চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবার ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি।

অনেক ফল এসেছে। ফলের ভারে মাচা ভেঙ্গে পড়ছে। আশা করছি লাভবান হতে পারবো। প্রথমে সবাই ভয় দেখালেও এখন অনেকেই বলছে সামনের বছর তারাও তরমুজ চাষ করবে। আর একজন কৃষক মুনিরুল ইসলাম বলেন নতুন ফসল চাষ একটু কঠিন। তবে কৃষি বিভাগ সবসময় আমাদের পাশে ছিল এবং পরামর্শ সহ সকল বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। তাই আশা করছি আমি ভাল ফলন পাবো।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আলী জানান ২০২২ সালে মাত্র ২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। এবার ৫ একর তরমুজ আবাদ হয়েছে। আগামী বছর আরো বৃদ্ধি পাবে। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ অত্যন্ত লাভজনক। এসময় তরমুজের দামও ভাল পাওয়া যায়। পাইকার জমিতে এসে তরমুজ নিয়ে যায় ফলে ফসল বিক্রয় নিয়ে কৃষককে চিন্তা করতে হয়না।

অল্প সময়ে ফসল হয় বিধায় একই জমিতে একই খরচে দুইবার তরমুজ চাষ করা যায়। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প সহ অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যের ফসল চাষ এবং কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তারে কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকের পাশে আছে এবং থাকবে। অদম্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি। সেখানে পিছিয়ে নেই ভোলাহাটের কৃষিও। আশা করছি আমরা সফল হব।