ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে পৌনে আট লাখ টাকা জরিমানা || নগরীর ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০১৭, ১২:১২ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক



ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর রাজশাহীর বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতি। ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল মঙ্গলবার নগরীর তিনটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করে।
এরই প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে সংক্ষপ্তি সমাবেশ করে তিনদফা দাবিতে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের ঘোষণা দেন মালিক সমিতির নেতৃবন্দ। দাবিগুলো হলো, যখন তখন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও অতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, অতিরিক্ত হোল্ডিং ট্যাক্স ও সাইনবোর্ড ফি প্রত্যাহার। তবে রাত ৮টার দিকে এই দাবির সঙ্গে আরো কিছু দাবি যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে, রাজশাহী বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সহসভাপতি ড. ফয়সাল কবীর চৌধুরী।
তিনি বলেন, এই দাবির সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গ্রেফতারকৃত কর্মচারীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে ও ভবিষ্যতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলে তা ১৯৮২ সালের ক্লিনিক পরিচালনা আইনানুযায়ী করতে হবে। যতক্ষণ না এই দাবিগুলো পূরণ হবে ততদিন এই ধর্মঘট চলতে থাকবে বলে জানান তিনি।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদের বিকেল ৩টা থেকে তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ ধর্মঘট চলছে। যতক্ষণ না প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ততক্ষণ এ ধর্মঘট চলতে থাকবে।
রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, সকালে যেসব রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছিল, তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট থাকলে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্লিনিকে যেসব রোগী ভর্তি আছে তাদেরও বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল নগরীর চারটি ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে, আমানা ক্লিনিককে সাড়ে ৩ লাখ টাকা, রয়েল হাসপাতালকে চার লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও জেনারেল হাসপাতালকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
জেলা প্রশাসন, র‌্যাব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বয়ে পরিচালতি অভিযানে নেতৃত্ব দেন র‌্যাব ফোর্সেস সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম। তিনি বলেন, চারটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানটি সাত লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গ্রীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও ভালো থাকায় তাকে কোনো জরিমানা করা হয়নি।
এদিকে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়ে রোগীরা। বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যায়। অনেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। কুষ্টিয়া থেকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন নসিমন বেগম। তার সঙ্গে ছিল তার ছেলে ইদরিস আলী। তিনি বলেন, মায়ের বাতের ব্যথা। পপুলার ডায়গানস্টিক সেন্টারে ডাক্তার দেখানো হয়। ক্লিনিক বন্ধ থাকায় এখন বাধ্য হয়ে হোটেলে থাকতে হবে।