ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ

আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০১৬, ১২:২৬ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক



নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)’র চালক বদরুল ও দেহরক্ষী সেলিমের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ দুই পুলিশ সদস্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মাদক ব্যবসায়ী বা জঙ্গি বানিয়ে ‘মিথ্যা’ মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছেন। টাকা না দিলে মামলা দেয়ার পাশাপাশি নির্যাতন করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা জানান, গত ১৮ নভেম্বর শুক্রবার থানার ধরমপুর পূর্বপাড়া এলাকার সোহেল (৩০) নামের এক নিরীহ যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন ওই দুই পুলিশ সদস্য। সোহেলের স্বজনরা জানান, চালক বদরুল এবং দেহরক্ষী সেলিম এরপর তাদের থানায় আসতে বলেন। তারা থানায় গেলে একলাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে তাদের ‘মিথ্যা’ মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হয়।
স্বজনরা আরো জানান, টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই দুই পুলিশ সদস্য সোহেলের দুই হাত পিছ মোড়া করে বাঁধেন এবং দুই চোখ বেধে ফেলে শুরু করেন নির্যাতন। একপর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে গিয়ে ধার দেনা করে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। এরপরও তাকে না ছেড়ে আরএমপি ধারায় আদালতে চালান দেয়। টাকা নেয়ার সময় ওই দুইজন পুলিশ সদস্য দাবি করেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করার জন্য এ টাকা নেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসির অভিযোগ, মাদক বা জঙ্গি মামলার ভয় দেখিয়ে থানার আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় গভীর  রাতে অভিযান চালিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিদের আটক করে তাদের মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এরপর তাদের কাছ থেকে ২৫ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এলাকায় যারা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার তাদেরকেই হয়রানি করছেন চালক বদরুল ও দেহরক্ষী সেলিম।
অভিাযোগের ব্যাপারে চালক বদরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গভীর রাতে ঘোরাফেরা করার কারণে সোহেলকে আটক করা হয়। এরপর তাকে আরএমপি ধারায় কোর্টে চালান দেয়া হয়। আমাদের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সঠিক না। এছাড়া আমরা কোন ব্যক্তিকে মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করি না। একইভাবে অভিযোগ অস্বীকার করছেন চালক সেলিম।
এ ব্যাপারে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ন কবীর জানান, সোহেলকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়। কিন্তু তার কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ সঠিক না। আমার অগোচরে সে থানার কাউকে টাকা দিলে অভিযোগ করতে পারতো। কিন্তু এ বিষয়ে সোহেল আমাকে কিছু জানাই নি। তাই এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। তবে এ ধরনের ঘটনা থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দুই পুলিশ সদস্যের টাকা আদায়ের অভিযোগ সম্পর্কে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ