রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পড়তে এসে আত্মহত্যা করা মালদ্বীপের মডেল রাউথা আতিফের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে তার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। এদিকে রাউথার মরদেহ মালদ্বীপে নিয়ে যাবার ব্যাপারে পরিবোরের সদস্যরা সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম।
এর আগে লাশের ময়নাতদন্ত করতে রামেকের পক্ষ থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. মনসুর রহমানকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন, ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. এমাদাদুর রহমান ও ডা. এনামুল হক।
ময়নাতদন্ত শেষে টিমের প্রধান ডা. মনসুর রহমান জানান, গতকাল দুপুর ১২টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রাউথার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তে প্রাথমিকভাবে কী পাওয়া গেছে তা জানাতে চাননি তিনি।
ময়নাতদন্তকারী টিমের আরেক সদস্য ডা. এনামুল হক বলেন, ‘আমরা কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছি। দু’একদিনের মধ্যেই ময়নাতন্তের প্রতিবেদন পুলিশকে দিয়ে দেয়া হবে। তখনই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। এখন এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করছি না।’
নগরীর শাহমখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, ময়নাতদন্তের পর মর্গ থেকে লাশ নিয়ে রামেকের হিমঘরে রাখা হয়েছে। মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত ও রাউথার পরিবারের সদস্যরা দুপুর পর্যন্ত আরএমপি’র সদর দফতরে অবস্থান করছিলেন। তবে তখন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত নেন নি, লাশ মালদ্বীপ নিয়ে যাওয়া হবে নাকি বাংলাদেশেই সমাহিত করা হবে।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হোস্টেল থেকে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাউথার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। রাউথার বাড়ি মালদ্বীপের মালেতে। তার বাবা মোহাম্মদ আতিফ পেশায় একজন চিকিৎসক।
২০১৬ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত ‘ভোগ ইন্ডিয়া’ সাময়িকীর নবম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সংখ্যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘বৈচিত্রের সৌন্দর্য উদযাপন’ (সেলিব্রটিং বিউটি ইন ডাইভার্সিটি) শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের নীলনয়না এই মডেল।
রাউথার লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে কী না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পরিবারের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল। পরে বৃহস্পতিবার রাজশাহী আসেন মালদ্বীপের মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত আইশাদ শান শাকির ও কমনওয়েলথের সেকেন্ড সেক্রেটারি ইসমাইল মুফিদসহ একটি প্রতিনিধি দল। পরে আসেন রাউথা আতিফের মা-বাবা ও ভাই। পরে গতকাল সকালে তারা রামেক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা রাউথার লাশ দেখতে যান। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপরই তারা লাশের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে গত বুধবার রাউধার লাশ উদ্ধারের দিনই নগরীর শাহমখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
আরএমপি’র মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বলেন, রাউথার মরদেহ মালদ্বীপে নিয়ে যাওয়া হবে কী না- সে ব্যাপারে তার পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন। তারা রাজমাহী সার্কিট হাউসে অবস্থান করছেন। মরদেহ যদি পরিবারের সদস্যরা মালদ্বীপে নিয়ে যেতে চান, তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।