মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে অমান্য করে রাণীনগরের একাধিক বিদ্যালয় মূল্যায়ন পরীক্ষা গ্রহণ করেনি

আপডেট: জুন ১০, ২০২৩, ৩:০২ অপরাহ্ণ

নওগাঁ প্রতিনিধি:


নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের নির্দেশনা মোতাবেক সারা দেশের সকল মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানে শনিবার ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মূল্যায়ন পরীক্ষা গ্রহণ করলেও উপজেলার সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয় ও আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা গ্রহণ না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন। এতে করে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, নতুন কারিকুলাম সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতিমূলক সেশন অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণের জন্য চলতি মাসের ৭তারিখ থেকে একটি রুটিন প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই রুটিন অনুয়ারী শনিবার (১০জুন) সারা দেশে ষষ্ঠ শ্রেণির গণিত আর সপ্তম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে বৃদ্ধা আঙ্গুলী দেখিয়ে উপজেলার সিম্বা ইউনাইটেড ও আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ই তাপদাহের অজুহাতে পরীক্ষা গ্রহণ করেনি। নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছে মাফিক বিদ্যালয়ে আসেন, বিদ্যালয় বন্ধ রাখেন। অধিকাংশ দিনই তিনি ২ঘন্টা আগে বিদ্যালয় ছুটি দেন।

এতে করে অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া উপজেলার সকল বিদ্যালয় সঠিক ভাবে পরীক্ষা গ্রহণ করছে কিনা সেই বিষয়ে কঠোর তদারকির কথা থাকলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এই বিষয়ে উদাসীন। যার ফলে উপজেলাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ করা পদক্ষেপ সঠিক ও সুষমভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এতে করে বিদ্যালয় প্রধানদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে উপজেলার একাংশ শিক্ষার্থীরা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন বলেন, তাপদাহের কারণে শনিবারের পরীক্ষা গ্রহণ করছি না। আগামীতে যে কোন দিন এই পরীক্ষা গ্রহণ করবো। তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে তিনি একক ভাবে শনিবারের পরীক্ষা অন্যদিন গ্রহণ করবেন এমন নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ইচ্ছে করলে তা করতে পারবেন।

সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ জানান, তিনি আন্দোলনের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। মন্ত্রণালয়ের ডিজি স্বাক্ষরিত কোন চিঠি তিনি পাননি। শুধুমাত্র ওয়েবসাইট থেকে রুটিন সংগ্রহ করেছেন। আর বর্তমানে নওগাঁর উপর দিয়ে প্রচন্ড তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। তাই শনিবারের পরীক্ষা তিনি অন্যদিন গ্রহণ করবেন বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। যার কারণে শনিবারের পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে না।

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুল হাসান বলেন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে অমান্য করে কেন ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শনিবারের পরীক্ষা গ্রহণ করছেন না সেই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক শনিবার পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তবে যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই অন্যকোন প্রোগ্রাম রেখে থাকে তাহলে সেটা অন্য বিষয়।

তবে যে নির্দিষ্ট সময় বেধে দেয়া হয়েছে তার মধ্যই এই মূল্যায়ন পরীক্ষা অবশ্যই শেষ করতে হবে। যদি কোন প্রতিষ্ঠান শেষ করতে না পারে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি কোন প্রতিষ্ঠান তাপদাহের অজুহাতে পরীক্ষা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে তাহলে তারা সরকারের নির্দেশনাকে অমান্য করলো।