মন্দিরে চুরি দেখে ফেলায় তরুণ দাসকে হত্যা, মূল আসামি চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার

আপডেট: জানুয়ারি ১০, ২০২৫, ৯:১৭ অপরাহ্ণ

নাটোর প্রতিনিধি


নাটোরের বহুল আলোচিত কাশিমপুর মহাশ্মশানে মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণ কুমার দাস (৫৮) হত্যাকাণ্ড ও চুরি ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মো. সবুজ হোসেনকে (২৪) বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর দিনগত রাতে ওই মহাশ্মশানের পাশে লেবু বাগান থেকে লেবু চুরি করতে আসে সবুজ ও তার সহযোগীরা। ওইদিন বিকেলে মহাশ্মশানে অনুষ্ঠিত একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সংগৃহীত টাকা মহাশ্মশানের ভাণ্ডারে থাকতে পারে ধারণা থেকে তারা ভাণ্ডার কক্ষে চুরির উদ্দেশে হানা দেয়। এসময় তারা কালী মন্দিরের তালা ভেঙে বিভিন্ন বাসনপত্র চুরি করতে গেলে তা দেখে ফেলেছেন সন্দেহে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তরুণের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে দেয়। পরে রাতের কোনো এক সময়ে তরুণ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত তরুণ দাসের ছেলে তপু দাস সদর থানায় মামলা দায়ের করলে হত্যার রহস্য অনুসন্ধানে নামে পুলিশ। অবশেষে গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হত্যার মূল আসামি মো. সবুজ হোসেনকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের খুব শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে আসামিকে নিয়ে শশ্মান চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন এসব তথ্য জানান।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ শরিফুল ইসলাম, নাটোর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন নেলী এবং সদর থানার ওসি মোঃ মাহবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

নিহত তরুণ দাস নাটোর শহরের আলাইপুর এলাকার মৃত কালিপদ দাসের ছেলে। তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ওই শশ্মানে রাতে থাকতেন এবং ভবঘুরে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। জড়িত গ্রেপ্তার আসামি মো. সবুজ হোসেন শহরের বড়হরিশপুর এলাকার মো. রমজান আলীর ছেলে।

পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত সবুজ একজন মাদকসেবী। তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ২০ ডিসেম্বর রাতে চুরি করতে এসে এ হতাকাণ্ড ঘটায়। পরের দিন ২১ ডিসেম্বর সকালে ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে তপু কুমার দাস সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করলে পুলিশ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত একাধিক টিম এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে নামেন।

অন্যদিকে সবুজসহ তার সহযোগীরা নাটোর থেকে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। আর সবুজ বিদেশ গমনের উদ্দেশে পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টায় ছিলো। গত বৃহস্পতিবার চট্রগ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সবুজের সঙ্গে থাকা অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। খুব শিগগিরই তারা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হবে।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুর রহমান জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা পুলিশসহ রাজশাহী থেকে সিআইডি এবং ক্রাইমসিন ইউনিট কাজ করেছেন। গ্রেপ্তার হওয়া সবুজ জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকাণ্ডেন দায় স্বীকার করে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Exit mobile version