রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
মহাদেবপুর প্রতিনিধি
দেশের সর্ববৃহৎ ব্রয়লার নগরী হিসাবে খ্যাত মহাদেবপুরকে ছাইমুক্ত গড়তে সামাজি ঘাসায়নের উদ্যোগ নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার। এই উপজেলায় প্রায় ৫শ টি হাসকিন ও অটোমেটিক রাইচমিল/ব্রয়লার থাকায় সরকারিভাবে দেশের সর্বাধিক ধান ও চাল ক্রয় মহাদেবপুর উপজেলায় হয়ে থাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসব অধিকাংশ হাসকিন ও অটোমেটিক রাইচমিলগুলো জয়পুরহাট জেলা সদর থেকে আন্তজেলা মহাসড়ক মহাদেবপুর হয়ে নওগাঁ জেলা সদর প্রবেশের দুই পাশে অবস্থিত। এসব ব্রয়লারগুলোর ছাই বিক্ষিপ্তভাবে রাস্তার পাশে নোয়ানজলি, ফাকাজায়গা, খাড়িতে ফেলে রাখে। হালকা বাতাসে সহজেই ছাইগুলো হাওয়াই ভেসে চলাচলরত বাইসাইকেল, মোরটসাইকেল, বাস, ট্রাক, চারজার ভ্যান, সিএনজি আরোহীসহ পথচারী সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। আর্থিকভাবে মহাদেবপুরকে স্বনির্ভর করলেও পরিবেশের উপর ব্রয়লারের ছাইগুলো মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এ উপজেলার প্রায় ৫শ ব্রয়লারের উৎপাদন ঠিক রেখে ছাইয়ের সদব্যহার করে পরিবেশ সুন্দর করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান উদ্ভাবিত অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উন্নত জাতের নেপিয়ার, পারা, গিনি ইত্যাদি জাতের ঘাস চাষে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ঘাস উৎপাদনে ছাই খুব প্রয়োজণীয়। উপজেলায় ব্রয়লার থেকে প্রচুর পরিমান ছাই উৎপাদিত হয় যার বড় একটা অংশ অব্যবহৃত অবস্থায় বিক্ষিপ্তভাবে রাস্তারধারে বা এখানে সেখানে পড়ে থাকে। ঘাস চাষের মাধ্যমে এই অব্যবহৃত ছাই ব্যবহার করে মানুষ ও পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে একদিকে যেমন রক্ষা হবে অপরদিকে এই ঘাষ চাষ করে দেশে প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে। অধিক উৎপাদনশীল এ ঘাসের চাষাবাদ পদ্ধতি ও পরিচর্যা অত্যন্ত সহজ। এটি একটি স্থায়ী ঘাস বিধায় একবার রোপণ করলে ৩ থেকে ৪ বছর ঘাস উৎপাদিত হয়। সারা বছরব্যাপী এ ধরনের ঘাস চাষ করা যায়। রাস্তার পাশে ব্রয়লারগুলোর ছাইয়ের উপরসহ সরকারি খাস জমি, বাঁধ, রাস্তা ও নদীর ধারে অধিক উৎপাদনশীল এ ঘাসের চাষাবাদ সম্প্রসারণ করা গেলে প্রাণিসম্পদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা তথা দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি করে মানুষের অতি প্রয়োজণীয় প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচনে এটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।