মাটি পরীক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা || সরকারের বিশেষ উদ্যোগ চাই

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭, ১২:০১ পূর্বাহ্ণ

আধুনিক কৃষির চাষাবাদে মাটি পরীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। অথচ সেই ব্যবস্থাটাই রাজশাহী অঞ্চলে স্থবির হয়ে আছে। দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকায় মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের স্থায়ী ঠিকানাই আজ পর্যন্ত হয়নি।  কার্যক্রম চলে ভাড়া বাসায়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও নেই অফিস। রয়েছে জনবল সঙ্কট। এর পাশাপাশি রয়েছে আধুুনিক যন্ত্রপাতির অভাব। অথচ স্বনির্ভর কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দফতর এটি।
মাটি পরীক্ষার পর প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ইন্সটিটিউট মাটির গুনাগুন ভেদে কৃষকদের সার প্রয়োগে পরামর্শ দেন। কোন্ মাটিতে কোন্ ফসল উপযোগী সে ব্যাপারে কৃষক তথ্য লাভ করতে পারে। একইসাথে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ কৃষকদের প্রশিক্ষণও দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কৃষি ও কৃষকবান্ধব এ প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় কার্যালয় রাজশাহীতেই।
অপরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ ও সার প্রয়োগের ফলে উৎপাদন কমছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এর ফলে প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় কৃষককে। এই পরিস্থিতি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা জরুরি।
কৃষিবিদদের বক্তব্য হলোÑ মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা এবং ফসলের উৎপাদন বাড়াতে মাটি পরীক্ষার বিকল্প নেই। তাই এনিয়ে কৃষকদেরই আগ্রহী হয়ে মাটি পরীক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু তারা তেমন সচেতন নন। কৃষকদের সচেতন করতে মাঠ দিবস, সভা-সেমিনারসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
রাজশাহী অঞ্চলকে দেশের খাদ্য ভা-ার বলা হয়। এ অঞ্চল উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করে থাকে। এ অঞ্চলের কৃষিকে বিশেষভাবে সমীহ করা হবে এটাই স্বাভাবিক। কেননা খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে রাজশাহী অঞ্চল বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এই সাফল্যকে কোনোভাবেই অবহেলা, পায়ে কুঠারাঘাতে শামিল হবে। আমরা জানি, সারা বিশ্ব জুড়ে যে মুহূর্তে অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল তখন সেই মন্দা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্পর্শ করেনি বললেই চলে। এর কারণটিই ছিল দেশের স্থায়ীত্বশীল একটি কৃষি ব্যবস্থা। সেই কৃষিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়াই সরকারের কর্তব্য-কাজ।
আমরা জানি, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছে। কেননা সার-কীটনাশক সহ কৃষি উপকরণ কৃষকের জন্য সহজলভ্য করা সম্ভব হয়েছেÑ যা অন্য সরকারগুলোর সময় বিশৃঙ্খল ছিল। একই সাথে কৃষকের জন্য নিপীড়নের ব্যবস্থা ছিল। নিঃসন্দেহে কৃষিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বর্তমান সরকারে একটি বড় সাফল্য। কৃষকের দোড়গোড়ায় পৌছে যাচ্ছে কৃষিঋণ ও ভর্তুকির টাকাÑ যা ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে।
সরকারির এতো সাফল্যের পরও বলা যায়, মাটি পরীক্ষার মত একটি অপরিহার্য ব্যবস্থায় ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা মোটেও কাম্য নয়। সরকার এ ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দিবে বলেই আমাদের ধারণা। কৃষির স্বার্থে, খাদ্যনিরাপত্তার সাথে এটি করতেই হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ