শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
মান্দা প্রতিনিধি
নওগাঁর মান্দায় তথ্য জালিয়াতির রেজিস্ট্রেশনে এসএসসি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার অংশ নেয়া জিপিএ ৫ প্রাপ্ত সেই ১০ শিক্ষার্থী আর পরীক্ষা দিতে আসে নি। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এসব অবৈধ পরীক্ষার্থীদের তথ্য অনুসন্ধান শুরু করলে কেন্দ্র থেকে গা ঢাকা দেয় তারা। উপজেলার জোতবাজার আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে অংশ নেয়া এসব পরীক্ষার্থী গতকাল রোববার রসায়ন ও পৌরনীতি পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল বলে নিশ্চিত করেন কেন্দ্র সচিব আবদুল আলীম।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ ও এ গ্রেডে উত্তীর্ণ ১০ শিক্ষার্থীকে জোতবাজার আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় থেকে চলতি বছরের পরীক্ষায় আবারো অংশগ্রহণ করানো হয়েছে। তথ্য জালিয়াতি করে এসব শিক্ষার্থীদের একই বিদ্যালয় থেকে নবম শ্রেণিতে দ্বিতীয়বার রেজিস্ট্রেশন করানো হয়। এসব শিক্ষার্থীরা হলো বিজ্ঞান বিভাগের হাবীবা খাতুন, পপি খাতুন, রোশেদা খাতুন, আঁখি খাতুন, আল্পনা, মাহমুদা আক্তার ও জাহানারা খাতুন এবং মানবিক বিভাগের আফরোজা খাতুন, রাশিদা খাতুন ও নাসিমা খাতুন। বর্তমানে তারা উপজেলার জোতবাজার মহিলা কলেজ, মান্দা থানা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, চককামদেব বিএম কলেজ ও বিএনবি আইডিয়াল কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত রয়েছে। এ বছর কালিকাপুর-চককালিকাপুর কেন্দ্রের ৪ ও ৬ নম্বর কক্ষে হাল রেজিস্ট্রেশনে পরীক্ষায় বসেছে এসব শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা জানান ‘গোল্ডেন’ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছেন তাদের। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। সহকারী প্রধান শিক্ষক মীর গোলাম মোক্তাদির রকেট বিস্তারিত না জানিয়ে বলেন, যা করা হয়েছে তা বিদ্যালয়ের স্বার্থেই করা হয়েছে।
অভিযোগের সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার পদার্থ ও ইতিহাস বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদ কেন্দ্রটিতে অভিযান চালান। তিনি দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া এসব শিক্ষার্থীর তথ্য প্রমাণ নিশ্চিত হন। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় নি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদ জানান, ১০ শিক্ষার্থীর দ্বিতীয়বার রেজিস্ট্রেশন করানোর তথ্য প্রমাণ নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি পরীক্ষা নীতিমালার পরীপন্থী। ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরুজ্জামান জানান, বিদ্যালয়টির দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, এখনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় নি। তবে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।