মালয়েশিয়ার স্বপ্নভঙ্গ: যাওয়ার সুযোগ পাবেন ১৮ হাজার কর্মী

আপডেট: অক্টোবর ৪, ২০২৪, ৯:১৬ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক:


সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দিতে না পারা প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
শুক্রবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

দুদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা তুলে ধরে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “যখন আপনারা আমাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, সাত হাজার বা তার বেশিদের বিষয় বিবেচনার জন্য, যারা নিবন্ধন করেও রাজনৈতিক অবস্থা, এখানকার অভ্যুত্থানের কারণে যাওয়ার সুযোগ হারিয়েছে, আমি তাৎক্ষণিকভাবে সেটা বিবেচনা করেছি।”

এই সংখ্যা ১৮ হাজার হওয়ার কথা অধ্যাপক ইউনূস মনে করিয়ে দিলে ইব্রাহিম বলেন, প্রথম ধাপে সাত হাজার জনের যাওয়ার উদ্যোগ দ্রুত নেওয়া হবে। সব সন্তোষজনক হলে বাকিদেরও ক্রমান্বয়ে নেওয়া হবে।
চলতি বছর নতুন-পুরাতন বিদেশি কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ৩১ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিমানের টিকেট স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে ওই সময়ের মধ্যে যেতে পারেননি প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি।

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যেতে না পারা এই কর্মীদের নিতে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে আসছিল বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় এসে সরকারের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার কথাই জানালেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “ওই ১৮ হাজার (কর্মী) সব ধরনের প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছে এবং এটা (যেতে না পারা) তাদের দোষ নয়। সুতরাং প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও পরিবর্তন করা আমাদের দায়িত্ব।”

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে ‘সিন্ডিকেটের তৎপরতা’ নিয়ে এক প্রশ্নে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, এক্ষেত্রে অতীতের পদ্ধতি ভেঙে দিয়েছেন তারা। এখন ‘স্বচ্ছ’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিয়োগ হচ্ছে।
“কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা আমাদের উদ্বেগের বিষয় নয়। আমাদের মাথাব্যথা হল এটা নিশ্চিত করা যে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা যেন ঠিকমত মানা হয়। আমাদের শ্রমিক দরকার এবং তাদের প্রতি যেন ‘আধুনিক দাসের’ মতো আচরণ করা না হয়।”

সব দেশের কর্মীদের ক্ষেত্রে একই নিয়ম থাকার কথা তুলে ধরে মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধান বলেন, “তার মানে হচ্ছে, প্রক্রিয়াটা স্বচ্ছ হতে হবে এবং তথাকথিত ‘সিলেক্টেড’ লোকদেরও কঠোরভাবে নীতি মানতে হবে।”
শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা এবং কাজের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় কেউ ঘটালে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “আমরা তাদের বাদ দিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছি এবং বাদও দিয়েছি।”

অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে যে সমালোচনা হয়, সেটা ‘উচিত নয়’ বলে মন্তব্য করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “অনুগ্রহ করে নিশ্চিত থাকুন যে, আমি নিজেও এই বাজে সিস্টেম এবং নির্যাতনের সিস্টেমের ভুক্তভোগী। সুতরাং এটাকে চলতে দেওয়ার কিংবা কোনোভাবে উপেক্ষা করার সরকার আমরা নই।”
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ

Exit mobile version