গোদাগাড়ী প্রতিনিধি:
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহির নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এক ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নাম উল্লেখ মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন তার মামাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম।
মামলার আসামিরা হলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল, দেওপাড়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগ সভাপতি ও প্রেমতলী ডিগ্রী কলেজের ল্যাব-সহকারি রিজওয়ান, দেওপাড়া ইউপি ১ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রতন আলী, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও গোদাগাড়ী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি সালমান ফিরোজ ফয়সাল এবং রাজাবাড়ীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মামুনুর রশিদ বাবু। এছাড়াও এই মামলায় আরও ৪ থেকে ৫ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসন্ন দাদ্বশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকের প্রার্থী শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া এলাকায় ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছেন। তার নির্বাচনী প্রচারণার সুবিধার্থে তার নির্বাচনী এলাকা রাজশাহী-১ আসনে ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকের একাধিক নির্বাচনী অফিস রয়েছে। গত শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত অনুমান সোয়া ২ টার দিকে গোদাগাড়ী থানাধীন ভাগাইল সেলিম মার্কেটে ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকের প্রার্থী শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া’র অনুমোদিত নির্বাচনি অফিসে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘটনাস্থলে এসে অগ্নি সংযোগ করে ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকের পোস্টারসহ নির্বাচনি অফিস পুড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। লোকজন যাতে নির্বাচনী প্রচারণা না করে এবং নির্বাচনের দিন যাতে ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকে ভোটারা ভোট দিতে না যায় এই বলে আসামিরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, এর পূর্বেও গত ২৯ ডিসেম্বর রাত ৯ টার দিকে পালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া’র প্রচারনাকালে আসামিরা আমাদেরকে নির্বাচনী প্রচারে বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে আসামিদের সাথে আমাদের লোকজনদের সাথে কথাকাটিকাটি হয়। তখন আসামীগণ ফোন করে আরো অজ্ঞাতনামা লোকজনদেরকে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে আসামিরা ও অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীগণ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার হুমকি প্রদান করে। আসামীগণ এও বলে যে, ঘটনাস্থল ত্যাগ না করিলে আমাদের লোকজনদের হাত পা বাইরাইয়া ভেঙে ফেলবে।
তখন ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকের প্রার্থী শারমিন আক্তার নিপা ঘটনার বিষয়ে তৎক্ষণাৎ গোদাগাড়ী থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে আসামীগণ আমাদেরকে এই মর্মে হুমকি প্রদান করেন যে, আমাদের লোকজন যাতে নির্বাচনী প্রচারণা না করে এবং নির্বাচনের দিন যাতে করে ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকে ভোটাররা ভোট দিতে না যায় বলে চলে যায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আসামীরা ৩১ ডিসেম্বর রাতে ভাগাইল সেলিম মার্কেটে ‘ট্রাক’ মার্কা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করিয়া অগ্নি সংযোগ করে।
এই বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভয়ভীতি প্রদানের বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৬৮। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। সেইসাথে আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হবে।
এদিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সমাবেশ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামীলীগ গোলাম রব্বনী। সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় উপজেলা সদর ডাইংপাড়া মোড় ফিরোজ চত্বরে প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা বদরুজ্জামান রবু মিয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে কাচি প্রতীকের ভোট চেয়ে গোলাম রব্বনী বলেন, গোদাগাড়ী তানোরের মানুষ ১৫ বছরের দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। সমাবেশে জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও স্বতস্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান আখতার কাচি প্রতীকে ভোট চেয়ে মাহিয়া মাহির নির্বাচনী অফিসে আগুনের ঘটনায় জড়িতদের আটক করে শাস্তির দাবি জানান। উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্রয়াত মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুর জান্নাতুল ফেরদৌস,জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাডভোকেট মোকবুল হোসেন,মাহবুবুল আলস মুক্তি প্রমূখ। সমাবেশে হাজার লোকের মানুষের ঢল নামে।