বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ইংল্যান্ড। কুকের ধারণা ছিল হয়তো পিচ থেকে পাওয়া সুযোগ লুফে নিতে পারবে তার দল। হয়তো দিন শেষে এক প্রস্থ হাসি নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারবে ইংল্যান্ড। কিন্তু তাদের সেই আশাতে পুরোপুরি জল ঢেলে দিয়ে সব আলো একাই কেড়ে নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে তার অফস্পিনে পুরোপুরি খেই হারিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে ইংলিশরা। প্রথম ইনিংসে ইংলিশরা সংগ্রহ করেছে ৭ উইকেটে ২৫৮ রান।
সব আলো নিজের করে নেয়া তরুণ অফ স্পিনার মিরাজ একাই নিয়েছেন ৫ উইকেট। যার শুরুটা করেন দলীয় ১৮ রানে ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট শিকার করেই। ৯.৫ ওভারে নিজের প্রথম স্পেলেই সাফল্য পান অভিষেক হওয়া এই স্পিনার। বোল্ড হয়ে ফিরে যান ওপেনার ডাকেট (১৪)। এরপর কারিশমা দেখান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। ১১তম ওভারে নতুন করে বোলিংয়ে এসেই আঘাত হানেন তিনি। তার বলে পুরোপুরি পরাস্ত হন ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। সুইপ করতে গিয়েও ঠিকমতো পারেন নি। বল তার হাতের ওপরের অংশে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ইংলিশদের হয়ে সর্বাধিক টেস্টের রেকর্ড গড়া কুক ফিরে যান ২৬ বলে ৪ রান করে।
দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ইংলিশদের এর পরেও ঘূর্ণি জাদুতে ভোগাচ্ছিলেন মিরাজ। যার ফসল হিসেবে আসে তার অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় শিকার। গ্যারি ব্যালান্সকে ফেরাতে এলবিডব্লুর আবেদন করেছিল টাইগাররা। যদিও তাতে সাড়া দেন নি আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে তাকে ঠিকই সাজঘরে ফেরায় বাংলাদেশ। ৭ বলে ১ রানে ফিরে যান ব্যালান্স। তবে এরপর ধীরে ধীরে প্রতিরোধ দিতে থাকে দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যান মঈন আলী ও জো রুট। চতুর্থ উইকেটে আসে ৬০ রান। আর মধ্যাহ্নভোজের আগেই সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৮১ রান। সে হিসেবে প্রথম সেশনে ভালোভাবেই নিজেদের আধিপত্য রাখে স্বাগতিকরা।
বিরতির পরও একই ধারায় ছিল এই বোলিং। যখন সাকিব বোলিংয়ে এসেছিলেন তখন ২৯তম ওভারেই দুই বার একই ব্যাটসম্যান মঈন আলীকে এলবিডব্লুতে আউট করার চেষ্টায় ছিলেন! অনফিল্ড আম্পায়ার আউট দিলেও পরে রিভিউতে দুবারেই বেঁচে ফিরেন মঈন আলী। তবে এরপরের ওভারে আর টিকে থাকতে পারেন নি তার সঙ্গে প্রতিরোধ দেওয়া জো রুট। ৪০ রানে এগিয়ে যাওয়া এই ব্যাটসম্যানকে থামান অভিষেকে উজ্জল মিরাজ। অবশ্য মুশফিকের হাঁটুতে বল লেগেই স্লিপে সাব্বিরের হাতে তালুবন্দী হন তিনি
এরপর অবশ্য জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন স্টোকস ও মঈন। ধীরে ধীরে সেভাবেই এগোচ্ছিলেন কিন্তু দলীয় ১০৬ রানে নিজের দুর্দান্ত স্পিনে স্টোকসকে পুরোপুরি পরাস্ত করেন সাকিব। বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। ততক্ষণে তার স্কোর ছিল ১৮ রান। এরপরেই একা সংগ্রাম চালাতে থাকেন বেঁচে যাওয়া মঈন আলী।
বেয়ারস্টোকে সঙ্গে নিয়ে ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। ধীরে ধীরে ভালোই প্রতিরোধ গড়ছিলেন সঙ্গীকে নিয়ে। কিন্তু ৬৮তম ওভারে মিরাজের ঘূর্ণিতে আর মনোযোগ স্থির রাখতে পারেন নি মঈন। খেই হারিয়ে ৬৮ রানে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরতে বাধ্য হন। ষষ্ঠ উইকেটে এই জুটিতে আসে ৮৮ রান। এরপর সপ্তম উইকেটে ওকসকে নিয়ে জুটি গড়তে থাকেন বেয়ারস্টো। ১১তম হাফসেঞ্চুরি করা বেয়ারস্টোকে (৫২) ফেরান ১৮ বছর বয়সী স্পিনার মিরাজ। এই উইকেট দিয়ে অভিষেকেই ৫ উইকেট শিকারের নজির গড়েন তিনি। বাংলাদেশিদের মধ্যে সপ্তম ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি অর্জন করলেন ১৮ বছর বয়সি এই তরুণ। এর আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালে ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। শেষ দিকে ৯২ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে থেকে প্রথম দিন শেষ করেন ক্রিস ওকস (৩৬) ও আদিল রশিদ (৫)।-খবর বাংলাট্রিবিউনের