মিষ্টান্ন স্বাদে রথের মেলা, আজ উল্টো রথ

আপডেট: জুলাই ৫, ২০২৫, ১:১০ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


মেলা মানেই মিষ্টান্নের সমাহার। মেলার সঙ্গে নান ধরনের মিষ্টি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। শহরে কিংবা গ্রামীণ মেলা- যাই হোক না কেনো মিষ্টির পসার থাকবেই। নগরীতে রথের মেলাকে কেন্দ্র করে অন্যসব সামগ্রীর সঙ্গে বসেছে বাহারি মিষ্টির দোকান। উৎসব সিনেমা হলের মোড় থেকে উত্তরে সাগারপাড়া বটতলা পর্যন্ত মেলায় ৩৫টি মিষ্টির দোকান বসেছে। যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মিষ্টান্ন বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের সমাগমে মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। সকালের দিকে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম থাকলেও বিকেলে রথের মেলা জমে উঠে। গভীর রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীদের ভীড়ে ছিল রথের মেলায়।

এদিকে, দর্শনার্থীদের ভীড়ের কারণে মেলা বসা সড়কটিতে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এই সড়কে চলাচল করা ব্যাটারি চালিত অটো ও অটোরিকশাগুলো বিকল্প সড়কে চলাচল করেছে। শনিবার (৫ জুলাই) মেলার শেষ দিন। এদিনটিকে বলা হয় উল্টো রথ।

রথের মেলার দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ৩৫টি দোকানে ১২ রকমের মিষ্টান্ন বিক্রি হচ্ছে। ১৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিভিন্ন মিষ্টি পাওয়া যাচ্ছে মেলায়। গুড় ও চিনির জিলাপি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে। চিনি ও গুড়ের ঝুরি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া লুকুম দানা (চিনির সেরার মধ্যে বাদামের মি¯্রণে তৈরি) বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি, মিষ্টি (দানাদার) ২০০ টাকা কেজি, কাচাগোল্লা ৪০০ টাকা কেজি, গুড়ের খই ২০০ টাকা কেজি, গুড়ের খই এর মুরকি ২০০ টাকা কেজি, চিনির খুরমা ২০০ টাকা কেজি, চিনির রসে ভেজানো নিমকি ২০০ টাকা কেজি, মতিচুরের নাড়ু ২০০ টাকা কেজি। এছাড়া সন্দেশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে।

চারঘাটের ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ বিক্রি করছেন গুড়ের ঝুরি, লুকুন দানা, গুড়ের খই। তিনি বলেন, মেলা মানে মিষ্টি খাবার। মিষ্টি খাবার ছাড়া মেলা জমে না। প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকার মিষ্টান্ন বিক্রি হচ্ছে। মেলায় দর্শনার্থীরা বেশি জিলাপি ও গুড়ের ঝুরি কেনে।

মেলায় স্ত্রী নিয়ে বেড়াতে এসেছেন কার্তিক দম্পতি। কার্তিকের স্ত্রী শ্যামলী রায় বলেন, মেলায় সবচেয়ে মজার জিনিস হচ্ছে মিষ্টান্ন। সারা বছর মিষ্টির দোকানগুলোতে পাওয়া গেলেও মেলার মিষ্টির স্বাদই আলাদ। ঝুরি কিংবা লুকুন দানা হাপকেজি বা আধা পোয়া কিনে খেতে খেতে মেলায় ঘোরার মজাই আলাদা। অনেক ভালো লাগে।

মেলায় অর্পনা রাণী দাস বলেন, মেলার জিলাপি খেতে ভালো লাগে। বাড়ির মানুষ জিলাপি খেতে পছন্দ করে। তাই দুই কেজি জিলাপি কিনলাম। শনিবার উল্টো রথ। সেদিন কেনাকাটার সময় পাব না। অনেক কাজ আছে। গ্রাম থেকে মা-বাবা আসবেন। তাই আগের দিনে কিনে রাখলাম।

অন্যদিকে, মেলায় খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে কাঠের তৈরি আসবাবপত্র ছাড়াও মটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র। মেলায় বিক্রি হচ্ছে শিশুদের বিভিন্ন খেলনাও। সপ্তাহব্যাপি চলা মেলার শেষ সময়ে জমেছে কেনাকাটা। এদিন মেলায় স্টিলের তৈজসপত্র, মাটি ও স্টিলের হাড়ি-পাতিল, খাট, সোফা, ওয়াড্রাপ, চেয়ার-টেবিল, শোকেস, আলমারি বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় ক্রেতা, দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ভালো ছিল। এদিন কেনাবেচাও বেশি হয়েছে। তাদের আশা মেলার শেষ দিন শনিবার (৫ জুলাই) জমবে কেনাবেচা।
রথের মেলার আয়োজকরা বলেন, মেলা সুষ্ঠুভাবে চলছে। শনিবার উল্টো রথ। এদিন রথের মেলা শেষ হবে। সারাদিনের চেয়ে সন্ধ্যার পরে গভীর রাত পর্যন্ত বেশি দর্শনার্থীদের ভীড় হচ্ছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version