মুক্তামনির প্রথম অস্ত্রোপচার ‘সফল’

আপডেট: আগস্ট ১৩, ২০১৭, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনি-সংগৃহীত

বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনির প্রথম অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
শনিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে মুক্তামনিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে ঢোকানো হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে তার ডান হাতের আক্রান্ত অংশটি ফেলে দেয়া হয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
২০ সদস্যের বেশি চিকিৎসকদের একটি দল জটিল এই অস্ত্রোপচারে যুক্ত বলে আগেই জানিয়েছিলেন বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন।
সোয়া ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে বেরিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন চিকিৎসক দল।
সামন্ত লাল বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে সফল। হাতটি রক্ষা করে ডিজিজড অংশটি কেটে নেয়া হয়েছে।”
হাতের ফুলে যাওয়া সংক্রমিত অংশটি কেটে ফেলে দেওয়ার পর হাতটি ‘ভালো’ আছে বলে জানান তিনি।
সামন্ত লাল বলেন, এরপর পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচ-ছয়টি অস্ত্রোপচার করতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আবুল কালাম বলেন, “স্কিন গ্রাফটিংসহ আরও পাঁচ-ছয়টি অপারেশন লাগতে পারে। প্রতি সপ্তাহে অথবা ১০ দিন অন্তর এই অপারেশনগুলো হবে।
“ডান হাতটি প্রিজার্ভ করাই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারনেই প্রাথমিক সফলতা পেয়েছে।”
মুক্তামনি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে ডা. আবুল কালাম বলেন, “বুক ও কাঁধের সংক্রমিত অংশ এখনও রয়ে গেছে। আমরা তা সরিয়ে দেব। এতে কিছুটা সময় লাগবে।
“আমরা হাতের যে সকল অংশে এগ্রেসিভ সংক্রমণ হয়েছিল তা সরিয়ে দিয়েছি। আগামী ৪-৫ দিন মনিটরিংয়ে রাখব। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”
অস্ত্রোপচার শুরুর আগে মুক্তামনির মা আয়েশা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডাক্তাররা বলেছেন, অপারেশন করলে ও ভালো হয়ে যাবে। এখন আমাদের দোয়া ছাড়া কিছু করার নাই, সবাই যদি দোয়া করে আমার বাচ্চা ঠিক হয়ে যাবে।”
মুক্তার রোগটি হেমানজিওমা’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গত শনিবার বায়োপসি সম্পন্ন করার পর সোমবার চিকিৎসকরা জানান, মূলত রক্তনালীতে টিউমার হওয়ার কারণে হাত ফুলে যায় মুক্তামনির।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেনের ১২ বছরের মেয়ে মুক্তামনির ডান হাতে দেড় বছর বয়সে একটি ছোট গোটা দেখা দেয়। পরে তা বাড়তে থাকে।
বছর চারেক আগে এমন পর্যায় যায় যে তার স্বাভাবিক চলাফেরা ব্যাহত হচ্ছে। আক্রান্ত হাতটি তার দেহের চেয়ে ভারি হয়ে উঠেছে, যন্ত্রণায় সব সময় অস্থির থাকে সে।
মুক্তামনির খবর গণমাধ্যমে আসার পর তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় সরকার, তাকে আনা হয় ঢাকায়।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ