মেলায় উদীচীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়ায় প্রতিবাদ, পোড়ানো হলো ব্যানার

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫, ৯:৪৪ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তারুণ্য মেলায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর (উদীচী) স্টল স্থান পাওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি সাতক্ষীরা জেলা শাখার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টায় সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে তারুণ্য মেলায় উদীচীর ৪১ নম্বর স্টলের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এতে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার আহ্বায়ক আরাফাত রহমান ও যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন রনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে উদীচী আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছিল। বিপ্লবের পর ১৫ আগস্ট শোক দিবস বাতিলের নিন্দা জানিয়েছিল উদীচী। তারা জুলাই বিপ্লব প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছিল। তাদের স্টল কীভাবে জেলা প্রশাসন অনুমতি দেয়। এই স্টলে শেখ রাসেলসহ আওয়ামী লীগের বই রাখা হয়েছিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

তারা আরও বলেন, ‘উদীচীর স্টল সম্পর্কে এডিসি বিঞ্চুপদ পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উদীচী কী? তারা কী করেছে তিনি জানেন না। স্টলগুলো দেওয়ার আগে নাম নেওয়া হয়েছে। জেনেশুনে কীভাবে এখানে তারা অনুমতি পেলো। ৫ আগস্টের পরে এসে এখনও যারা আওয়ামী লীগকে প্রমোট করার চেষ্টা করছে তাদের আমরা বাংলার মাটিতে চাই না। যারা এ কাজ করেছে সেই জবাব জেলা প্রশাসনকে দিতে হবে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকালে উদীচী স্টলের পার্শ্ববর্তী ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীতে থাকা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমানের লেখা ‘জীবন ও ঐতিহ্য’ বইটি সরিয়ে ফেলতে বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীর লোকজন বইটি সরিয়ে ফেলেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ডেকোরেটরের লোকজন এসে উদীচীর স্টলের ব্যানারটি নামিয়ে ফেলেন। পরে এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে সেটিতে আগুন দেন।

তবে বহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলা শাখার আহ্বায়ক আরাফাত রহমান লেখেন, ‘ব্যানার পোড়ানো বা মব জাস্টিসের মতো কাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থন করে না। এ ধরনের কাজের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলা শাখা জড়িত নয়। ভিডিওটি দেখেন আমরা সেখানে অবস্থানও করিনি। আমরা এই অভ্যুত্থানে ঘটানো হত্যাকারীদের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের বিপক্ষে সোচ্চার।’

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে ও তাদের দেওয়া ব্যানার টানিয়ে স্টল চালু করা হয়েছিল। হঠাৎ ব্যানার খুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান গ্রন্থাগারের ২০টি বই স্টলে ছিল। সেগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা নিয়ে গেছেন।’

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক বিষ্ণুপদ পাল বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে উদীচীর স্টল সম্পর্কে আমাদের জানানো হয়েছিল। আমরা তাদের বলেছিলাম বিষয়টি দেখবো। কিন্তু এর মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলো। পরে স্টলটি অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি।’
জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘আমার কাছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রনি (নাজমুল হোসেন) ফোন করেছিলেন। বলেছি বিষয়টি দেখবো। একজন এডিসিকে গিয়ে দেখতে বলেছিলাম। এর আগেই ব্যানার পুড়িয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।’
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ