মেসির কান্না, এরপর শিরোপা উৎসব

আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২৪, ১:২২ অপরাহ্ণ

মেসিকে সান্ত্বনা দেন সতীর্থরা

সোনার দেশ ডেস্ক :


ফ্লোরিডার হাজারো দর্শকের সামনে লিওনেল মেসি কি চিন্তা করেছিলেন, এভাবে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে? এমনিতে বয়স হয়েছে। আগের সেই জেল্লাটা নেই। তার ওপর আগে থেকে ছিল হালকা চোট। কোপার ফাইনালে কলম্বিয়ার খেলোয়াড়দের শরীর নির্ভর খেলায় পুরো ৯০ মিনিট খেলতে পারলেন কই?

দ্বিতীয়ার্ধে পায়ের চোট নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন। তখন হয়তো দুশ্চিন্তা ভর করছিল, জিততে পারবে তো দল? অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বিদায়টা স্মরণীয় হবে তো? অবশেষে টানটান উত্তেজনার ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে এসে লাউতারো মার্টিনেজ গোল করে মেসির সঙ্গে লক্ষ কোটি সমর্থকের ঠোটে হাসি ফুটিয়েছেন।

আনন্দ-উৎসবের আরও একটি উপলক্ষ পেয়ে যারপরনাই সবারই বাধভাঙা উল্লাস ছিল দেখার মতো।
সেই ফাইনালিসিমার পর আজ নিয়ে টানা চারটি শিরোপা এখন লিওনেল স্কালোনির দলের হাতে। ফাইনালিসিমা+কোপা আমেরিকা+বিশ্বকাপ+কোপা আমেরিকা= ৪! এমন টানা সাফল্য কম দলেরই আছে। ইউরোপে স্পেনকে ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড আলবিসেলেস্তদের। এমন আনন্দমুখর দিন মনে রাখবে সমর্থকরা।

তবে নির্ধারিত সময়ে যেভাবে কলম্বিয়া হাই প্রেসিং ও শরীর নির্ভর খেলেছে তাতে করে ভয়টা জেঁকে বসেছিল। তার ওপর চোট নিয়ে ৬৬ মিনিটে মেসির খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়া নিয়ে ভয় ও আতঙ্ক দুটোই চেপে বসে। শঙ্কা জাগে ডি মারিয়ার বিদায় কি উৎসবমুখর হবে না? মেসির হঠাৎ কান্নাভেজা বিদায়ে হয়তো আলভারেজ-মার্টিনেজদের চোয়াল আরও শক্ত হয়েছে।

শেষ বিন্দু দিয়ে লড়ে মেসির অভাব সেভাবে অনুভূত হতে দেননি। ডি মারিয়াও নিজের শেষ ম্যাচে শেষ দিকে উঠে আসার আগে জানপ্রাণ দিয়ে লড়াই করেছেন।

ওদিকে পায়ে বরফের স্তুপ লাগিয়ে কান্না থামিয়ে বিষণ্ন মেসি। টেলিভিশন পর্দায় অবয়ব দেখে চিন্তার ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছিল। অতিরিক্ত সময়ে আলভারেজের জায়গায় লাউতারো নেমে যেন সবার দুশ্চিন্তা দূর করে দিলেন। দারুণ এক গোল করে দলকে টানা চারটি শিরোপা জেতাতে ভূমিকা রাখলেন। তাতে করে মেসির অবয়বে চওড়া হাসি। পাশাপাশি সমর্থকসহ অন্যদের আকাশ ছোঁয়া আনন্দ।

ট্রফির সঙ্গে বন্ধুর বিদায়টা স্মরণীয় হলো। তানাহলে ক্যারিয়ারের বাকি সময়টুকু আফসোসে পুড়তে হতো। শুধু ডি মারিয়া কেন। মেসির ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার সুপ্ত পরিকল্পনা। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত ফিট থাকাটা বড় চ্যালেঞ্জ। সামনে কী হবে বলা কঠিন। তাই ডি মারিয়ার পাশাপাশি নিজের জন্য কম আনন্দের নয় এই ট্রফি।

অন্তত ২০২৬ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত আনন্দমুখর আবেশে থাকবেন সবাই। তাই আজকের কোপা আমেরিকার ট্রফিটা ধরে রাখাটা ছিল সব দিক দিয়ে বড় চ্যালেঞ্জের।

মেসির মাঠে থাকা মানে প্রতিপক্ষের জন্য একধরনের চাপ, আবার না থাকলে অদৃশ্য! এমন দিনে কলম্বিয়া তা হারে হারে উপলব্ধি করেছে। মেসির মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দলের শক্তিতে কমতি পড়েনি তাও প্রমাণ হয়েছে।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামের পর ফ্লোরিডায় মেসি-ডি মারিয়াদের ট্রফি নিয়ে উল্লাস ছিল দেখার মতো। তাদের জন্য এমন দিন সত্যিকার অর্থে চির স্মরণীয়!- বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version