শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
মোস্তফা কামাল, মোহনপুর
রাজশাহীর মোহনপুরে অনুমোদন ছাড়াই চলছে ইটভাটা। প্রশাসনের অবহেলার কারণে কয়লার পরিবর্তে অবাধে ফলবান বৃক্ষের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পাশেই অবস্থিত বিশালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার মাঝে পাঠদান দেয়া হচ্ছে। ইতোপূর্বে বিদ্রিকা ইটভাটা মালিকদের অসাবধানতার কারণে শিশুমৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। দ্রুত মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসির।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছোট আয়তনের মোহনপুর উপজেলায় ফসলি জমি নষ্ট করে প্রায় ১০টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। উল্লেখযোগ্য উপজেলার বিদ্রিকায় প্রায় ৩০ বিঘা ফসলি জমি নষ্ট করে গড়ে উঠেছে এএমএম ব্রিকস্, বিষহারায় গড়ে উঠেছে এমএমবি ব্রিকস্ ও ঘাসিগ্রামে গড়ে উঠেছে হ্যাপি ব্রিকস্ নামে ইটভাটা। এছাড়াও বড়াইল, হাটরা মীরপুর, জামতলাসহ বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন নামে গড়ে উঠেছে নানা ইটভাটা। পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন মহলে মাসিক মাসোহারা দিয়ে অবাধে চলছে অনেক ইটভাটা। অনুমোদিত ভাটা মালিকরা ট্যাক্স, ভ্যাট পরিশোধ করলেও বিভিন্ন মহলে ঘুষ দিয়ে দেদারচে চলছে অনুমোদনবিহীন ভাটাগুলো। এতে একদিকে ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয় অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। এ কারণে মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ ঝুঁকিতে সর্বসাধারণ পড়ছে বলে সচেতন মহলের দাবি।
কেশরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্রিকা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, এখানে ইটভাটা স্থাপনের জন্য গত পাঁচ বছর ধরে আম ও ডাব গাছে ফল আসছে না। কালো ধোঁয়ার কারণে অসুস্থ হচ্ছে শিশুরা। ভাটার ইট বানানোর মাটি আনা নেয়া এবং ইট পরিবহনের ব্যবহৃত গাড়ি চলাচলের জন্য রাস্তা ভেঙে সর্বসাধারণের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এজন্য বিদ্রিকা ইটভাটা সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্রিকা ইটভাটার একাংশের মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, ভাটা চালানোর জন্য কোনো অনুমোদন নেই। ভাটা চালানোর জন্য পরিবেশ অধিদফতরের নিকট অনেকদিন আগে আবেদন করা হলেও এখনো অনুমোদন পাওয়া যায় নি। তবে যেখানে সমস্যা বাঁধে তা বিভিন্নভাবে মেটানো হয়।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, ইতোপূর্বে এ বিষয়ে কেউ অবগত করে নি। তবে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই চালানো ইটভাটাসহ যেসব ভাটায় কাঠ পোড়ানো হবে ওইসব ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জনস্বার্থে ক্ষতিসাধন এ ধরনের কোনো কিছু করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও আস্বস্ত করেন তিনি।